কালিগঞ্জে ইছামতি নদী থেকে বালু উত্তোলনের আড়ালে মাদক ব্যবসা, বিলীন হচ্ছে দেশের ভূখন্ড
ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ইছামতি নদী থেকে বালু উত্তোলনের আড়ালে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। এর ফলে নদীতে বিলীন হচ্ছে দেশের ভূখন্ড। স্থানীয় শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজী গং বালু উত্তোলনের পাশাপাশি এই মাদকের রমরমা ব্যাবসা চালাচ্ছে।
সরজমিনে দেখা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার বিজিবি ক্যাম্প শোলপুর বিওপি হতে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে ও শূন্য লাইন হতে দেড়’শ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর চকগোবিন্দপুর দমদমিয়া নামক স্থানে ও খানজিয়া ক্যাম্প থেকে দুই’শ গজ উত্তরে সীমান্ত শুন্য লাইন থেকে এক’শ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর খানজিয়া নামক স্থানে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজী ও তাদের সহযোগীরা বালু উত্তোলনের পাশাপাশি মাদকের রমরমা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর ফলে স্থানীয় পরিবেশ-প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। অন্যদিকে বালু উত্তোলনের আড়ালে মাদক ব্যাবসায়িদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। বিলীন হতে চলেছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড, দেশ হারাচ্ছে সীমানা। বালু উত্তোলনের আড়ালে চলছে চোরাকারবারীদের মাদক ব্যবসা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই রুট নিরাপদে ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। বালু ভর্তি কার্গো ও ট্রলার এবং বাল্ক হেডে করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসছে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় নিষিদ্ধ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার দুটি বালুমহল বাতিলসহ তাদের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন বডার গাড বাংলাদেশ, ১৭ বিজিবি ও জেলা প্রশাসন।
এদিকে, ওই বালুমহলের স্বত্তাধীকারি শেখ সাব্বির আহমেদ ও কুদ্দুস গাজীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। লাইসেন্সের স্বত্তাধিকারী শেখ সাব্বির আহমেদ তৈ পিতা ইয়াসিন আলির নামে নাজিমগঞ্জ বাজারের বিপরীতপার্শ্বে কালিগঞ্জ পুরাতন বাজার নদী সংলগ্ন একটি (আফগারি) মদের লাইসেন্সের দোকান আছে।
সাব্বির আহমেদের নামে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কাযার্লয় থেকে তার নামে বালুমহলের লাইসেন্স রয়েছে বালুমহল ডাকার জন্য সাব্বির আহমেদের নামে ডাক থাকলেও ব্যবসা চালায় কুদ্দুস গাজী ও হাতকাটা রনি।
উল্লেখ্য: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি ১৯৭৫ অনুযায়ী সীমান্তে শূন্য রেখা হতে ১৫০ গজের মধ্যে এ ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ডেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের কারণে ইছামতি নদীর আশেপাশের এলাকায় এবং বেড়িবাধের ক্ষয়ক্ষতি ও হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এদিকে, বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নদী হতে বালু উত্তোলনের ফলে বেড়িবাধ ভাঙছে। চলাচল করতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে এবং সীমান্ত এলাকায় বিজিবি অপারেশনাল কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে নদীর স্রোতের দিকে পরিবর্তন হওয়ায় বেড়িবাধ ভেঙে যাচ্ছে।নদীর পাড় ভাঙ্গনের ফলে ভারতের পার্শ্ব চর সৃষ্টি হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সীমারেখা হারিয়ে যাচ্ছে।
ইছামতি নদীর পাড় ভেঙে বাংলাদেশের জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার ফলে সীমান্ত শূন্য রেখা বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড হ্রাস পাচ্ছে। জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় বিজিবি টহল দল কর্তৃক প্রতিপক্ষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে বিজিবি সহ স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ এবং আশেপাশে এলাকার ও স্থাপনা সমুহের সম্ভাব্য সকল হুমকি ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য বিষয়টি বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে বালু উত্তোলন বন্ধ ও বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিভিন্ন দপ্তরে বডার গাড বিজিবির পক্ষ থেকে ও স্থানিয়ভাবে এবং প্রশাসনিক ভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)