নতুন সরকারেও যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ কমছে না
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ঋণের রাজা হিসেবে পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ঋণের পরিমাণ ৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পরই মার্কিনিদের জন্য ২ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এ অর্থ কাজে লাগাবেন দেশের অর্থনীতির লাগাম টানতে। এরমধ্যে চাকরি হারানোদের ২ হাজার ডলারের চেক দেবেন বাইডেন।
এদিকে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ঋণের পরিমাণ ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির দিনদিন ব্যয় সংকোচন নীতির পথে হাঁটছে। গেল সপ্তাহেই প্রায় ১০ লাখের কাছাকাছি মার্কিনি বেকারভাতার জন্য আবেদন করেছেন। এর আগের সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লাখ। দেশটিতে বেকার সংখ্যা দিন দিন মহামন্দার সময়ে যেমন ছিল, তেমন পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।
দেশটিতে এখন কর বাড়ানোর প্রক্রিয়াও স্থগিত আছে। বাজেট ঘাটতি কমাতে অনেক ব্যয় হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যখাতের সংকট আর ধনী দরিদ্র অসমতা দিনদিনই বাড়ছে উন্নত এ দেশটিতে। শেয়ারবাজারের অবস্থান বেশ ভালো হলেও অর্থনীতিতে তা খুব একটা সুফল বয়ে আনছে না। কারণ দেশটির মুভি থিয়েটার, এয়ারলাইন্স, হোটেলসহ অন্যান্য অনেক খাতই প্রায় বিপর্যয়ের মুখে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি এখনও গভীর সংকটের মধ্যে আছে। গেলো মাসের ৯০ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনার সুফল এখনো পাননি মার্কিনিরা। এ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও বেকারদের ভাতা হিসেবে। এরপরও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে আরো বেশি প্রণোদনা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণা বলছে, চলতি বছর দেশটির বাজেট ঘাটতি পৌঁছাতে পারে ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে। যা গেল বছরের ৩ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম। তবে মোট ঋণ দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বাড়বে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেড়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ঋণ হয়ে যাব তার চেয়েও বেশি। মহামারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পৌঁছেছে।
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো আর ইউনাভার্সিটি অব নটর ড্যামের তথ্য অনুযায়ী, গেল বছরের জুন থেকে এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গেলো বছর করোনা মহামারীর কারণে অন্তত ২ কোটি ৭০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাবার ছিল না অনেকদিন।
বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর জানান, মার্কিনিরা অন্তত ১০ বছর ১ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় যা ছিল ৩ শতাংশ। কিন্তু যদি ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়তেই থাকে, তাহলে দেশটির মোট ঋণ আরো বাড়বে, যা অর্থনীতির জন্য আরো ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)