স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সাতক্ষীরার মাছখোলা বাজারে মানববন্ধন


স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সাতক্ষীরার মাছখোলা বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকালে ‘অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের বন্ধ কর, জলাবদ্ধতা নিরসন কর,’ বেতনা নদী পুন:খনন কর, জনমানুষকে রক্ষা কর’’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মাছখোলাবাসীর আয়োজনের ও মাছখোলা ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিনের উদ্যোগে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেন্বার মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে ও সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মুনসুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো: আনিসুর রহিম।
তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ২৬ বছর তখন মাছখোলা বাজারে এসেছিলাম। সেসময় এলাকার মানুষের মধ্যে একটি ইউনিটি ছিল। কিন্তু আজকের এই মানববন্ধনে আসার সময় সড়কে, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ির উঠানের হাঁটু পানি দেখে বিস্মিত হয়ে গেলাম। যা এখানে না আসলে উপলব্ধি করা সম্ভব হতো না। বিষয়গুলো দেখে মনে হলো এলাকার মানুষের মধ্যে আগের মতো এখন আর কোন ইউনিটি নেই।
তিনি আরও বলেন, বেতনা নদী ও পানি নিষ্কাশনের পথ দখল করে অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে মাছখোলায় বছরের পর বছর স্থায়ী জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যা জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় এমপি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানেন। কিন্তু এখানে কেউ আসেন না। তাদের পাশে কেউ দাড়ায় না। সেজন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য ও জনমানুষকে ঐ ব্যক্তিদয়দের দাওয়াত করে এখানে আনার কথা বক্তব্যে ব্যক্ত করেন তিনি।
আনিসুর রহিম বলেন, সরকারের বরাদ্দকৃত টাকার প্রকল্পগুলোর কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার আমার সকলের। কিন্তু জনসচেতনতার অভাবে আমাদের জেলার অধিকাংশ মানুষ সেটি করেন না। তাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ স্বচ্ছতার সাথে না করে দায়সারাগোসের করেন। ফলে জেলার জনমানুষ দিনের পর দিন হয়রানির স্বীকার হয়। সেজন্য সকলকে সচেতন হয়ে কাজ বুঝে নেওয়ার আহবান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্ঠা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিত পরিকল্পনার জন্য জেলার কোটি কোটি টাকার উন্নয়নক প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগে বেতনা নদী খননের জন্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। কিন্তু ঐ বরাদ্দকৃত টাকার ৩০% খনন কাজেও ব্যয় হয়নি। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল। আমরা স্বচ্ছতার সাথে তাদের কাজটি করতে বললেও তারা করেননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঘেরমালিকদের বিরুদ্ধে নয়, যারা কোটি টাকা আয়ের জন্য হাজার হাজার মানুষকে পানিবন্দি করে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি। তাদের জন্য এলাকার শত শত পরিবারের নারী, শিশু ও বয়স্করা পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে।
এছাড়াও অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদের সংগঠক অ্যাড. বেলাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ উদীচীশিল্পী গোষ্ঠী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, গণফোরাম কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য আলী নুর খান বাবুল, ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম। এসময় মাছখোলা ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিন, সনজিৎ বিশ্বাস, সুশীল দাশ, ওলিদ, রশিদ, তোফাজ্জেল, আহম্মদ, মফিজুল, নুরুল আমিন, মিন্টু, লাল্টু, সাগর, কাওছার আলীসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা মাছখোলা ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিন প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
