সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যাতে বিচারবহির্ভূত বা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা না ঘটে সেটি বিবেচনায় গত সরকারের ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রী বা নেতাদের অনেককেই আশ্রয় দিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা যাবে।
রাজশাহী সেনানিবাসে মঙ্গলবার বিকালে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার অতিরিক্ত সচিব ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমান, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনানিবাসে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেখানে তিনি রাজশাহী বিভাগের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, আনসার, র্যাব, বিজিবিসহ সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি এখন শান্ত হয়ে এসেছে। আমি বলবো যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণভাবেই আমাদের নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ কিছুটা ট্রমার মধ্যে আছে। ট্রমাটা কাটিয়ে উঠলে পুলিশ তাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে পারবে। পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন থানায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। আমরা পুলিশকে নিয়মমতো প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছি। তারা সম্পূর্ণভাবে যখন কাজকর্ম শুরু করে দেবে, তখন পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তখন আমরা সেনানিবাসে ফেরত যাবো। সেই পর্যন্ত আমরা থাকবো ও কাজ করে যাবো।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু যে ইস্যুটা আছে, দেখলাম যে এখানে একেবারেই ওরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই আটটা জেলায় (রাজশাহী বিভাগের আট জেলায়)। এটা অত্যন্ত ভালো দিক ও এই যে একটা সুন্দর পরিবেশ সেটা বজায় রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে কাজ করবো ও দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাবো। আমরা সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে যেতে চাই। সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব, যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করি।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অবশ্যই আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, মামলা হয় তাহলে তারা শাস্তির আওতায় আসবেন। অবশ্যই আমরা চাইবো না যে, বিচারবহির্ভূত কোনো কাজ বা হামলা হোক। তাদের জীবনের যে হুমকি আছে, সেটার জন্য আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক, যে ধর্মের হোক, সেটা (নিরাপত্তা) আমরা দেখবো।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুর কোনো ইস্যু নেই। বহির্বিশ্বের কোনো চাপ নেই। রাষ্ট্রের সংস্কার শেষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনে সেনাবাহিনী বর্তমান সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
সৌজন্যে:যুগান্তর
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]