অপেক্ষার পালা শেষ। প্রমত্ত পদ্মা নদীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর এবার মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সব আয়োজন শেষ। এখন শুধু উদ্বোধন। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই শুভ কাজটি সারবেন।
এরপরই তিনি হবেন মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী। তাকে নিয়ে ছুঁটবে নগরবাসীর দীর্ঘ দিনের চাওয়া আধুনিক মেট্রোরেল। যাত্রীদের অভ্যস্ত করতে আপাতত সকাল ৮টা থেকে পরের ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কেবল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।
আর পল্লবী, মিরপুর, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার স্টেশনগুলো চালু হবে আগামী ২৬ মার্চ থেকে। আর মতিঝিল কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু করে আরও এক বছর পর। এভাবেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজধানীতে যুক্ত করে মেট্রোরেলের বিশাল নেটওয়ার্ক।
অনেক অপেক্ষার মেট্রোরেলের উদ্বোধন বুধবার। আগারগাও থেকে উত্তরা পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিচের সড়কে এখন উৎসবের আমেজ। ঝাঁ চকচকে রাস্তা। ফুলের বাগান আর শেষ মুহুর্তের ধোয়া মোছার কাজ চলছে সর্বত্র।
প্রধানমন্ত্রী উত্তরা থেকে এসে নামবেন আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে। এই স্টেশনের পুরোটাই এখন প্রস্তুত। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ২৯ তারিখ থেকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত শুধু উত্তরা থেকে আগারগাও পর্যন্ত মেট্রো চলবে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোরেলের নির্মাণকারী সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, আপাতত উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে এটি। মাঝখানে কোনো স্টেশনে থামবে না।
তিনি বলেন, সব স্টেশনে মেট্রোরেল থামানোর জন্য সব প্রস্তুতি আছে। কিন্তু মানুষ অভ্যস্ত নয় বলে এখনই থামানো হবে না। এই তিন মাস মানুষকে অভ্যস্ত করা হবে। আগামী ২৬ মার্চ থেকে মেট্রোরেল সব স্টেশনে থামবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য মেট্রোরেলে কোনো হাফ ভাড়া থাকছে না। গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও মেট্রোরেলে না থাকার কারণ জানান এমডি, এমনিতেই যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা খরচের ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কম।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগামী বছর ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। ২০২৫ সালে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। সে ক্ষেত্রে পুরোটা চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে ৩৮ মিনিট লাগবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ৫ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মেট্রোরেলের বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আতশবাজির কর্মসূচি ছিল। সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুর আদলে সুধী সমাবেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে।
সেতুমন্ত্রী জানান, আপাতত ছয় কোচবিশিষ্ট ২৪ সেট চালু থাকবে। তবে, ভবিষ্যতে আট কোচে উন্নীত করা যাবে। মাঝের চারটি কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন, ট্রেইলর কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
ছয় কোচবিশিষ্ট মেট্রোরেলে মোট আসনসংখ্যা ৩০৬টি। মাঝের চারটি কোচের প্রতিটিতে আসনসংখ্যা ৫৪টি, ট্রেইলর কোচের প্রতিটিতে আসনসংখ্যা ৪৫টি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]