পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা একটি জনবহুল এলাকা। এই উপজেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্হিতি স্বাভাবিক রাখতে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ নতুন থানা ভবন নির্মান প্রয়োজন। বর্তমানে এখানে অবকাঠামো সমস্যা এত বেশি যে কখনো কখনো মামলা লেখার জন্য জায়গা পায় না কোন কোন এসআই ও এএসআই। কেউ কেউ বাসায় বসেই মামলা লিখেন।
মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত আছে ৭১ জন পুলিশ আর থানার জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। পুলিশের নিজেদের প্রশাসনিক কাজ ঠিকভাবে করারই জায়গা নেই। সাধারণ মানুষ থানায় আসলে আইনি সেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হয়।
বর্তমান পুলিশ জনবান্ধব ও জনগণের পুলিশ হয়ে কাজ করছে। কিন্তু সেবাপ্রার্থীদের বসতে দিতে পারে না মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। এতে অফিসারদের মাঝে মাঝে অনুতপ্ত হতেও দেখা যায়। প্রশাসনিক কাজ করার জন্য পরিমিত জায়গা না থাকায় দ্রুত আইনি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হয় অনেককে।
মঠবাড়িয়া থানার ওসির বাসা বর্ষার মৌসুমে জোয়ারের পানিতে ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। পরিবার নিয়ে স্যাতস্যাতে পরিবেশে থাকতে হয় তাকে। বাসা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবছর।আধুনিক পুলিশ বাহিনী হিসেবে এটা অনেকটা বেমানান।
তদন্ত ওসির থাকার কোন সরকারি বাসা বা কোয়ার্টার নাই। দোতলায় কনস্টেবলদের থাকার পাশের রুমেই থাকতে হয় তাকে। থাকার রুমের স্পেসও সংকীর্ণ। মহিলা পুলিশ ও কনস্টেবলদের থাকার কোন ব্যারাক নাই। মালখানা ও অস্ত্রাগারের জায়গা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র সংরক্ষণের তেমন পরিবেশ নেই। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেই ইন্টারোগেশন সেল।
এসআই ও এএসআইদের জন্য পর্যাপ্ত কক্ষ ও আসন ব্যবস্থাও নেই। ৫ জন বসার যোগ্য একটি কক্ষে এসআইদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। ১৭ জন এসআই বসার মত কোন কক্ষ নেই। কেউ কেউ ফাইলপত্র টেবিলে রাখতে না পেরে ব্যাগে বহন করে বাসায় নিয়ে যান আবার থানায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগ পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুম জানান, থানা পুলিশের অবকাঠামো সংকট নিরসনে আধুনিক ভবন নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃপক্ষ জেলা পুলিশ সুপারের নিকট ডিমান্ড নোট পাঠাবে। পুলিশ সুপার বিষয়টি বিবেচনা করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অগ্রগামী করবেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার গণপূর্ত বিভাগে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়া সংক্রান্ত চিঠি দিলে আমরা পরিদর্শনপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরন করব। এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেকে প্রস্তাবনাটি পাস করতে পারেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মোঃ ইব্রাহীম বলেন, দেশের সব থানায় পর্যায়ক্রমে আধুনিক থানা ভবন নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আধুনিক পুলিশ বাহিনী পুরাতন ও জরাজীর্ণ ভবনে থেকেও নিরলসভাবে জনগণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ বাহিনী জরাজীর্ণ ভবনে থেকেও সেবা দেওয়ার বিষয়টি নজড়ে পড়ায় ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, অবকাঠামো সংকট নিরসনে অফিসার ইনচার্জ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে প্রস্তাবনা পাঠাতে পারেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]