সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটের সময় থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: আ ফ ম রুহুল হক-এমপি এবং সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, লকডাউনের সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের চলাচল ও ভিড় এড়ানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরার সাথে যশোর ও খুলনাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগের পয়েন্টগুলিতে পুলিশ চেকপোস্ট থাকবে। এসময় সীমান্তে পারাপার বন্ধ থাকবে। শহরে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাঁধা নিষেধ অমান্যকারীদের জরিমানা করা হবে। সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত জানান, করোনা সংক্রমনরোধে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
সভায় সার্বিক বিবেচনায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে আগামী শনিবার সকাল ৬টা থেকে সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ি, সংবাদ মাধ্যমের গাড়ি এবং স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত সকলের যানবাহন ছাড়া সকল ধরনের পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে দোকানপাট কাঁচাবাজার সকাল ৯টা হতে বেলা ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মাস্ক বিহীন কোন ব্যক্তি ঘোরাফেরা করা করলে তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। সকল উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে ভোমরা স্থলবন্দরে সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে কিন্তু আশপাশের সকল দোকান বন্ধ থাকবে।
এসময় পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আল মাহমুদ, সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন শাফায়াত, মেডিকেলে তত্ত্বাবধায়ক ডা: কুদরত-ই-খোদা, জেলা শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবুসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত: সম্প্রতিকালে সাতক্ষীরা জেলায় করোনা সংক্রমন উদ্বেজনক হারে বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে ভারত ফেরত বৈধ ও অবৈধ যাত্রীদেরকে নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে প্রশাসন। এসব যাত্রীদের বিভিন্ন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই করোনা সংক্রমনের হার ৫০ পার্সেন্ট অতিক্রম করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লকডাউনের জন্য সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। গত দুই দিনে সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমনের হার ছিল প্রায় ৫৪ শতাংশ। করোনা পজিটিভ নিয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪৫ জন। এদিকে, ভোমরা স্থল বন্দরে ভারতীয় আমদানীজাত পণ্যবাহি ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপারদের বন্দর এলাকায় অবাধ বিচরণ করোনা সংক্রমনের অন্যতম কারণ। যার কারণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এক সপ্তাহের লকডাউনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]