আজ ১৩ নভেম্বর ৪৯তম উজ্জলপুর শহীদ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জলপুর গ্রামে আত্মাহুতি দিয়েছিল পাঁচ সূর্যসন্তান।
১৯৭১ সালে ঝিকরগাছার বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জলপুর, খোসালনগর, দিগদানা, মাটশিয়া ও মণিরামপুরের ডুমুরখালী গ্রামসহ এলাকায় অবস্থানরত কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন ফজলুর রহমান। ঘটনার দিন ১৩ নভেম্বর খোসালনগর কপোতাক্ষ নদের ঘাটে কেশবপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুভাষের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ পাহারায় থাকার কথা ছিল কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পূর্বে তারা পাহারা স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। যার ফলে মণিরামপুরের রাজগঞ্জের ঝাঁপা থেকে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকাররা গোপনে কপোতাক্ষ নদ পার হয়ে খোসালনগরে চলে আসে। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অপর একটি গ্রুপ আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে খোসালনগর খেয়াঘাট পাহারা দিতে কপোতাক্ষ নদের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পথিমধ্যে উজ্জলপুর গ্রামের নিছার আলী সংবাদ দেন, পাকসেনারা নদ পার হয়ে এপারে চলে এসেছে এবং নিকটে কোথাও অবস্থান করছে। তখন মুক্তিকামী সেনাদল আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে সামনের দিকে এগুতে থাকে পাকসেনাদের খোঁজে। সেখানে বাগানে ওত পেতে থাকা পাকসেনাদের অতর্কিত হামলায় শহীদ হন কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোর্ট গ্রামের আব্দুল খালেক, মণিরামপুর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামের জামাল উদ্দীন খান, হানুয়ার গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক, জামশেদ আলী ও রোহিতা গ্রামের নূর ইসলাম। হামলার পর পাকসেনারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুনরায় সেই পথে ফেরার সময় জামাল উদ্দীন খানকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। তারপর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক হোসেন আলী ও গ্রামবাসী পাঁচ শহীদকে উজ্জলপুরেই দাফন করেন। ১৯৯৫ সালে সেই শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সেখানে মুক্তিযোদ্ধা দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]