যশোরে ফারহানা আফরোজের বিয়ের সাজে মোটর সাইকেল বহর নিয়ে চলার ভিডিও এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
তবে করোনাভাইরাস মহামারীকালে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা এবং ট্রাফিক আইন না মেনে তার এই চলার সমালোচনা যেমন হচ্ছে। আবার একটি মফস্বল শহরে এভাবে চলাচলে তার সাহসের প্রশংসাও হচ্ছে।
ফারহানার বিয়ে তিন বছর আগে হয়েছে এবং তার একটি সন্তানও রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
ফারহানার এক বন্ধু বলেছেন, তার বিয়ের সময় কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। তাই এবার তার নবজাতক সন্তান নিয়ে বাড়ি ফেরা উপলক্ষে পরিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিজের সেই আফসোস ঘুচিয়েছেন এই নারী।
যশোর শহরের পোস্টঅফিস পাড়ার সোহেল হাসান মিঠুর মেয়ে ফারহানা থাকেন ঢাকায়, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করার পর চাকরিও করছিলেন, সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর যা ছেড়ে দেন।
ফারহানার চাচা শাকুর মাহমুদ শোভন জানান, ২০১৭ সালে ঢাকায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সঙ্গে তার ভাতিজির বিয়ে হয়। তারপর থেকে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায়ই ছিলেন তিনি।
গত জুন মাসে ফারহানা ছেলের মা হন। বিয়ের সময় কোনো জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান না হওয়ায় স্বামী-ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরা উপলক্ষে গত ১৩ অগাস্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শাকুর মাহমুদ বলেন, গত এপ্রিল মাসে বিবাহোত্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে নিষেধাজ্ঞায় তা ভেস্তে যায়।
১৩ অগাস্ট ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে সেজেগুজে বিশাল বহর নিয়ে শহরে ফারহানার মোটর সাইকেল চালানোর ভিডিওই ফেইসবুকে আলোড়ন তোলে।
বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার একটি বিউটি পার্লার থেকে সেজে ফারহানা বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরের ঈদগাহ মোড় হয়ে সার্কিট হাউসের সামনে দিয়ে তার বাড়িতে ফেরেন।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকটি মোটরসাইকেলে এক ঝাঁক বন্ধুকে সঙ্গী করে ফুলেল সাজে রাইডে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফারহানা।
তবে তাদের কাউকেই ট্রাফিক আইন অনুযায়ী হেলমেট পরতে দেখা যায়নি। আর এই করোনাভাইরাস মহামারীকালে কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি, যা পরা বাধ্যবাধকতামূলক। সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতেও দেখা যায়নি ফারহানার উৎসবের সঙ্গীদের।
ফারহানার ভিডিও দেখে এই বিষয়গুলোর সমালোচনা করে ফেইসবুকে লিখেছেন অনেকে।
বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে ফারহানার বান্ধবী নওরীন মোক্তাকি জয়া বলেন, “ফারহানা বাইক চালাতে পারে, তাই শখ ছিল নিজের বিয়েতে বাইক রাইডিং করার। ও শো-আপ চায়নি।
“বিয়ের সময় অনুষ্ঠান করতে পারেনি- কেবল কলমা পড়া হয়েছিল। তবে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা ছিল তার। এতদিন পর বিয়ের অনুষ্ঠান করছে, সেখানে সে তার শখ পূরণ করেছে তাতে-অন্যদের সমস্যাটা কী?”
তিনি জানান, ঢাকায় এক বেসরকারি সংস্থায় যখন চাকরি করতেন, তখন মোটরসাইকেল চালিয়ে অফিসে যাতায়াত করতেন ফারহানা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওই চাকরি ছেড়ে দেন।
তার এ মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার বিষয়টি ফারহানার স্বজন, প্রতিবেশীদের নজরেও পড়েছে।
প্রতিবেশী এম তমাল আহমেদ প্রশংসার সুরে বলেন, “বাংলাদেশের অভিনয় জগতের তিন নক্ষত্র সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা হল ফারহানার চাচাত ফুফু।
“তার পরিবার অনেক আগে থেকেই সংস্কৃতিমনা ও প্রগতিশীল। সে স্বাধীনচেতা হিসেবে বড় হয়েছে।”
সৌজন্যে: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ভিডিও দেখতে লিংকে ক্লিক করুন (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
https://www.facebook.com/Photographer.SaifulRaju/videos/923558501387885/
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]