কলারোয়ায় এনআরবিসি ব্যাংকে আবেদন ছাড়াই ৯০লাখ টাকার ঋণ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় নিরহ গ্রাহক বাদী হয়ে ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার নামে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী গ্রহক শেখ অহিদুল ইসলাম জানান- প্রায় বছর আগে এক ব্যক্তির অনুরোধে ব্যাংকের হিসাব খোলার জন্য নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করেছিলেন। তারপর তিনি কোন দিন ব্যাংকে যাননি বা কোন লেনদেনও করেননি। পরে অন্য ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড করতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে দেখতে পারেন তার ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। হতবাক হয়ে তিনি খেঁাজ খবর নিয়ে জানতে পারেন এই তুঘলকি ঘটনা ঘটিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া শাখায়। তিনি এই ঘটনা জানতে পেরে ব্যাংক ম্যানেজারসহ ৫ ব্যাংক কর্মকর্তাকে আসামী করে খুলনার দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য বিধি মোতাবেক দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনাকে প্রেরণ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক নাজমুল আহসান মামলার কথা স্বীকারও করেন।
খুলনার দৌলতপুর থানায় দাখিলকৃত এজাহারে বলা হয়, রাজিব মটরস এর শেখ অহিদুল ইসলামের কাছে পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী রাব্বী এন্টারপ্রাইজ আব্দুল হালিম শেখ এনআরবিসি ব্যাংকে হিসাব খোলার জন্য ব্যাংকের ফরমে স্বাক্ষর নিয়ে যান। কোন টাকা জমা না দেওয়ায় তার আর বিষয়টি স্মরণে নেই। এ বছর তিনি খুলনার ব্র্যাক ব্যাংকে একটি ক্রেডিট কার্ড নেয়ার জন্য আবেদন করেন। বিধি বিধান মত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট দেখা যায় তার সাতক্ষীরা কলারোয়ায় এনআরবিসি শাখায় ৯০ লাখ টাকার টাইম লোন রয়েছে, যা ৬/৯/২০২১ তারিখে নেয়া হয়েছে। যার মেয়াদ শেষ হবে ৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে। এই হিসাব অনুযায়ী ৬/৯/২০২১ থেকে ৮/১১/২১ পযন্র্Í ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা লেনদেন করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে চেক বই গ্রহণ, পে অর্ডার এমনকি ব্যাংকের সুদও পরিশোধ করা হয়েছে। এব্যাপারে এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া শাখার ম্যানেজার কাজী মোশারেফ হোসেন, ম্যানেজার অপারেশন শাহেদ শরীফ, জুনিয়ার অফিসার বদিউর রহমান ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম শেখসহ ৫জন অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের নামে জাল জালিয়াতি করে ঋণ দেওয়া হয়। এজাহারে বলা হয় তার রিক্যুজিশন স্লিপ, কোন আবদেন না করা এবং লেনদেনের কোন এলার্ট ম্যাসেস মোবাইলে না আসায় তিনি এই মামলা দায়ের করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা উপ পরিচালক নাজমুল আহসান বলেন, এ অভিযোগটি মঙ্গলবার তারা পেয়েছেন, প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির পর তারা তদন্ত শুরু করবেন।
এব্যাপারে এনআরবিসি ব্যাংক কলারোয়া ব্যাংকের ম্যানেজার কাজী মোশারেফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে এই ঋণের কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, শেখ অহিদুল ইসলাম অভিযোগ করার পর এই টাকা সমন্বয় করে দেয়া হয়েছে এবং গ্রাহকের কোন অভিযোগ নাই বলে তিনি দাবি করেন।
ব্যাংকে না গিয়ে কোন আবেদন না করলেও ৯০ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে হলো?- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বারবার টাকা সমন্বয় করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, ঠিকাদারি কাজের বিপরীতে এই ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপাারে শেখ অহিদুল ইসলাম জানান, তিনি কোনদিন ব্যাংকে যাননি, হিসাব খোলা ফরম ছাড়া কোন কাগজে তিনি সই করেননি, কোন লেনদেন বা চেক বইয়ের জন্য আবেদন করেননি। সেখানে ৯০ লাখ টাকার ঋণ এটা বড় ধরনের জাল জালিয়াাতি আর এর সাথে ব্যাংকের বড় সিন্ডিকেট চক্র জড়িত। তিনি ব্যাংকে অভিযোগ করার পর তারা টাকা সমন্বয় করে দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, ব্যাংকের ম্যানেজার এখন তাকে বার বার মোবাইল করে ক্ষমা চাচ্ছেন এবং অভিযোগ না করার জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করছেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]