জি.এম আল ফারুক, আশাশুনি: ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে তিনি আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট বেড়িবাঁধ, শ্রীকলস, তুয়ারডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প, প্রতাপনগরের চাকলা বেড়িবাঁধ সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন কালে তিনি চাকলায় ২০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। এসময় তিনি বলেন, ঝড়ে বিধ্বস্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আমরা আছি। ইতোমধ্যে আপনাদের জন্য ২৭ টন চাল ও ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জ্বরাজীর্ণ ও জলোচ্ছাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত যত বেড়িবাঁধ আছে সে গুলো দ্রæত সময়ের মধ্যে মেরামত করতে বলা হয়েছে।
পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রনি আলম নূর, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, থানা অফিসার ইনর্চাজ বিশ্বজিৎ কুমার, এসডিও রাশিদুল ইসলাম, আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেনুজ্জামান হোসেন, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রহুল কুদ্দুস, প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজ্বী আবু দাউদ, পিআইও সোগান খান, এসও মমিনুল হক সহ প্রমুখ।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর তান্ডবে নদী ভাঙনের হাত থেকে আশাশুনি উপজেলা বাসী রক্ষা পেলেও প্রচন্ড ঝড়ে উড়ে গেছে উপজেলায় ২৫৩ টি পরিবারের বসতঘর ও ২৪ টি স্কুল, মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চাল।
হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের ক্ষতি হয়েছে বেশি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ঝড়ের তাÐবে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙেছে ১১টি, বেঁকে গেছে ২৭টি, তার ছিঁড়ে গেছে ৮১ টি স্পটে, ক্রস ওয়ান ভেঙেছে ১৫টি, ট্রান্সফার্মা নষ্ট হয়েছে ১৩টি ও ভেঙে পড়েছে ২০৩ টি মিটার।
আশাশুনি পল্লী বিদ্যুতের এজিএম লিটন মÐল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঝড়ের কবলে পড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় প্রত্যেক অ লে লাইন চালু করতে ঠিকাদার ও অফিসের প্রায় শতাধিক শ্রমিক রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। তবে এর পরেও আরও দুই দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার সুমন আলীর দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর জলোচ্ছাসের তান্ডবে উপজেলার প্রায় ২০ কি.মি. বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন বর্মন জানান, ঝড়ে কালকি, খাজরা সহ বিভিন্ন স্থানে মোট ৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চাল উড়ে গেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, ঝড়ে ৯ টি মাদ্রাসা ও ৭ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর টিনের চাল উড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সোহাগ খান জানান, ঝড়ে ৪০ কাঁচা ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে ও ২১৩ টি ঘরের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]