আশাশুনির বেউলায় সাংবাদিক পরিচয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের নিকটে চাঁদাবাজী করার সময় জনতার রোষানলে পড়ে ৪ ব্যক্তি দুই মোটর সাইকেল ফেলে ভোদৌড় দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা গ্রামে।
থানা সূত্রে ও নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল আলিম জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে জনৈক আব্দুল মান্নান (মোবা: ০১৭১৪-৫৩৮৯২২২), হাফিজুর রহমান (মোবা: ০১৭৭৭-০১৬৪৬৫), মোশাররফ হোসেন আব্বাস (মোবা: ০১৯২৬-৯৫৫৯৫১) ও রবিউল ইসলাম (মোবা: ০১৯২৭-৬০৩০৩৪) বেউলা গ্রামে নিকাহ রেজিস্ট্রারের বাড়িতে আচমকা হাজির হন। প্রথমে তারা নিজেদেরকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল থেকে এসেছে (সাংবাদিক) পরিচয় দিয়ে বাল্য বিবাহসহ বিবাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য চাওয়ার ছলে চাঁদা দাবি করে। তাদের কথপোকথনে সন্দেহ হলে নিকাহ রেজিস্ট্রার গোপনে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ পার্শ্ববর্তী লোকের সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। ওই সাংবাদিক পরিচয়ধারীরা একে একে লোকজনের আনাগোনা দেখে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এক পর্যায়ে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ফেলে কৌশলে পালিয়ে ভো-দৌড় দেয়। সাথে সাথে থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের ফেলে যাওয়া সাদা-কালো রঙের ১১০ সিসি হোন্ডা মোটরসাইকেল যার নং-সাতক্ষীরা-হ-১৬-১৫১৫ ও ১০০ সিসির এ্যাস কালারের ফ্রিডম মোটরসাইকেল যার নং-সাতক্ষীরা-হ-১৩-৮৬০৩ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত: সাংবাদিক পরিচয়ধারী এ চক্রটি ইতোপূর্বে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী, আশাশুনি সদর, বুধহাটা, শ্রীউলা, খাজরাসহ পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ উপজেলা ও অন্যান্য উপজেলায়ও বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজী করে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া বেকারী, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পোল্ট্রি খামারের মালিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজী করে আসছিল। এই চক্রটি সম্প্রতি শ্বেতপুর জোড়া আমতলা মোড়ের হোমিও ডাক্তার বলরাম বিশ্বাসের চেম্বারে গিয়ে চাঁদাবাজী করেছিল। পত্রপত্রিকায় এ বিষয়ে জেলাই চলছে ভয়ংকর সাংবাদিকতা শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়। কয়েকমাস আগে একই চক্র সদরের আমতলা মাদ্রাসায় মোটরসাইকেল বহর নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় চক্রটি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। বাল্যবিবাহের অজুহাতে শহরের গড়েরকান্দা এলাকার এক অসহায় ব্যক্তির কাছ থেকে এই চক্রটি বছর খানিক আগে আদায় করেছিল দশ হাজার টাকা। আশাশুনির বুধহাটা এলাকার বিভিন্ন ক্লিনিক, আশাশুনির কয়েকটি ইটভাটায় সম্প্রতি চাঁদাবাজী করেছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এভাবে জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চাঁদাবাজী করে সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে সাংবাদিক নামধারী চক্রটি। ভুক্তভোগীরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পুলিশ প্রশাসনসহ ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্রে. পত্রদূত
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]