আশাশুনি ফকরাবাদ জেবি নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনিয়ম, দূর্নীতি ও মোটা অংকের টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। ফকরাবাদ জেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শূন্য তিনপদের বিপরীতে অফিস সহায়ক, নাইট গার্ড পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগ প্রকাশ করা হয়েছে যার পরীক্ষা আগামী ১৮ মে। তিনটি পদে আাশাশুনি উপজেলায় ফকরাবাদ গ্রামের জগদীশ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে রনজিত মন্ডল কে অফিস সহায়ক পদে ১৭ লক্ষ টাকা ,নাইট গার্ড পদে একই গ্রামের গোপাল চন্দ্র সানার ছেলে ধীরাজ সানা নিকট থেকে ১৬ লক্ষ টাকা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে একই গ্রামের নিশিকান্ত মন্তলের স্ত্রী কৃষ্ণারাণী মণ্ডল নিকট থেকে ১৫ লাখ টাকা আগাম ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে।১৩ মে সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এই নিয়োগ বাণিজ্যর দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সুব্রত কুমার মন্ডল লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন। তিনি আরও জানান, ১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ের নির্বাচিত হই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে। হঠাৎ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বড়দল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জগদীশ চন্দ্র সানা কে সভাপতি হিসাবে দেখানো হয়েছে। যা কোন নির্বাচন ছাড়া নিয়ম বর্হিভূত ভাবে সভাপতি হয়ে তিনি তার ক্ষমতা বলে তিনটি পদে ৪৮ লক্ষ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করছেন। এবিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে এই পাতানো নিয়োগ বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ন কবিরের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে।
যার অনুলিপি শিক্ষা মন্ত্রী,শিক্ষা সচিব,শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেছেন। এসব সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফকরাবাদ ওর্য়াড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
৪৮ লক্ষ ব্যাপক নিয়োগ বাণিজ্যি অভিযোগে ভিত্তিতে অনুসন্ধানীতে দেখা গেছে গোপনীয়তা রক্ষা করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যাতে চাকুরির জন্য বাইরে থেকে কেউ দরখাস্ত করতে না পারেন। কোন প্রত্রিকায় নিয়োগ প্রকাশিত হয়েছে জানতে চাইলে পত্রিকার নাম, তথ্য দিতে পারছে না স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার ঢালী । পাতানো নিয়োগে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্কুল প্রতিষ্ঠাতা কালীন সদস্যরা।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জগদীশ চন্দ্র সানা ও প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার ঢালাী যোগসাজশ করে নিয়োগ বাণিজ্য সেট করেছে। তিন পদের বিপরীতে তিন জন প্রার্থীর নিকট থেকে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ৪৮ লক্ষ টাকা নিয়েছে। তিনি আরো জানান,অফিস সহায়ক পদে রনজিত মন্ডল থেকে ১৭ লাখ, নাইট গার্ড ধিরাজ সানা থেকে ১৬ লাখ, ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে কৃষ্ণারাণী মন্ডল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। আগে থেকে সেট করা নিয়োগের মূল মাষ্টার মাইন্ড জগদীশ চেয়ারম্যান।
নিয়োগ বাণিজ্যর বিষয়ে জেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জগদীশ চন্দ্র সানা বলেন, আগামী ১৮ মে নিয়োগ আছে জেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। নিয়োগ বাণিজ্য হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জগদীশ বলেন, সারাদেশে তো নিয়োগ বাণিজ্য হয় এটা নতুন কি। যেভাবে সবজায়গায় চলছে সেভাবে নিয়োগ হচ্ছে। ৪৮ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন পদে নিয়োগ হচ্ছে সত্য কি না সাংবাদিকরা জগদীশ কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ওই টাকা দিয়ে স্কুলের জমি কিনতে চাই। কবে জমি কেনা হবে প্রশ্ন করলে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।
জেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার ঢালী বলেন, ১৮ মে তিনপদের বিপরীতে স্কুলে নিয়োগ আছে সত্য। নিয়োগ বাণিজ্য হচ্ছে প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি কিছু জানি না সবকিছু চেয়ারম্যান জগদীশ সানা জানে। কতজন আবেদন করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি জানি না। জগদীশ চন্দ্র সানা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওনার ইচ্ছেমত সব হয়। ওনি কাউকে মূল্যায়ণ করে না। এর চেয়ে আমি কিছু বলতো চায় না। আমার বলা নিষেধ।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, আমি নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ শুনেছি। নিয়োগ বন্ধ হবে কি না জানতে চাইলে বলেন নিয়োগ বন্ধ করার এখতিয়ার জেলা প্রশাসকের আছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ শুনেছি, জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিলে নিয়োগ বন্ধে পদক্ষেপ নিব।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]