ঈদে মানুষের মনে সুখ নেই: রিজভী
পবিত্র ঈদুল আজহার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই আনন্দঘন ঈদে মানুষের মনে সুখ নেই, আনন্দ নেই। মানুষের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে এই লুটেরা সরকার।
রোববার (১৬ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, মানুষের ঘরে খাবার নেই। উচ্চ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাও এখন অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা, তারাও কোরবানি করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা কম, যারা আছেন বেশিরভাগ সরকারি দলের লুটেরা, অবৈধ অর্থের মালিকরা। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শেয়ার বাজার থেকে আরম্ভ করে পাড়া মহল্লার কাঁচা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অসহায় সাধারণ জনগণ।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আর তার মাফিয়া চক্রের দুর্নীতি লুটপাটের কারণে সেই বাংলাদেশ বর্তমানে আবার তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চরম অরাজকতা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাফিয়া সরকার এখন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরছে।
রিজভী বলেন, অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার কারণে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার হারিয়ে জনগণ আজ নিজ দেশেই যেন পরাধীন এবং বন্দি। অরক্ষিত দেশের সীমান্ত। সেন্ট মার্টিন প্রায় অবরুদ্ধ। বাংলাদেশের নাগরিকরা সেখানে যেতে নিরাপদ বোধ করছে না। সেন্ট মার্টিনকে ঘিরে গত কয়েকদিন মিয়ানমার যা করছে, এটি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য চূড়ান্ত হুমকি। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দীর্ঘদিন থেকেই চরম অস্থিরতা চলছে। মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ভারী অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে। যুদ্ধ কবলিত মিয়ানমারের জান্তা সেনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও প্রায়শই ঢুকে পড়ছে। শেখ হাসিনার তাবেদার সরকার যথারীতি জান্তা সেনাদের আগ্রাসি ভূমিকায় নির্বিকার রয়েছে। পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ, গত ৭/৮ বছরেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে জোর করে ঠেলে দেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজনকেও মিয়ানমার ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। কেন সম্ভব হয়নি? বাংলাদেশ কি কোন দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে? তাহলে কার স্বার্থ রক্ষা করছে? মিয়ানমারের ব্যাপারে বাংলাদেশ কি নীতি অবলম্বন করছে, অবশ্যই জনগণের সেটি জানার অধিকার রয়েছে।
শেখ হাসিনার তাবেদারী আচরণের কারণে বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন আজ কোনো সীমান্তেই নিরাপদ নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশসহ মোট সাতটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। অন্য কোনো দেশের সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করার সাহস না করলেও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায়শই বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারাচ্ছে বাংলাদেশি নাগরিক। গত ৯ জুন কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এভাবে ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি আর তাবেদারী মানসিকতার কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করার সাহস এবং স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে আওয়ামী সরকার। আজ বাংলাদেশের সীমান্ত অনিরাপদ। বিপন্ন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। অথচ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার তাবেদার সরকার-নির্বিকার।
তিনি আরও বলেন,শেখ হাসিনার তাবেদার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে আজিজ আর বেনজীরের মতো দুর্নীতিবাজদের ব্যবহার করে দেশে বিদেশে বিশেষায়িত বাহিনীগুলোর সম্মান-গৌরব-ইমেজ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং মত দমনে স্বৈরাচারী সরকার যেভাবে র্যাবকে ব্যবহার করেছে, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে এই ঘাতক বাহিনীতে এই মুহূর্তে আর কোন সেনা কর্মকর্তা এবং সদস্যদের পোস্টিং অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতা আর ভোট ডাকাতি নিরাপদ করা সেনাবাহিনীর কাজ নয়, বরং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ রাখাই সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ। সার্বভৌমত্ববিরোধী তৎপরতা চললেও সীমান্তজুড়ে এখনো কেন সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হচ্ছে না? অবিলম্বে সীমান্তজুড়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের তাগিদ দেন তিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)