মো: জাবের হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডের কোর-এ বিশেষ অবদানের জন্য সারা বাংলাদেশের বিএনসিসি অফিসার ক্যাটাগরিতে এক্স্-ক্যাডেটস্ পদক ২০২৪ এ ভূষিত হয়েছেন ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলী।
বাংলাদেশ এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (বেকা) বিএনসিসি তে বিশেষ অবদান রাখার জন্য আশাশুনি সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলীকে এ পুরষ্কৃত করেছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (শুক্রবার) ঢাকার তেজগাঁও সিভিল অ্যাভিলিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মাননীয় মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফারুক খান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জি.এম কামরুল ইসলাম (অবসরপ্রাপ্ত) সাবেক ডিজি বিএনসিসি, সভাপতিত্ব করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম শাহজাহান (অবসরপ্রাপ্ত), লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আলাউদ্দীন, মহাসচিব মোহাম্মদ নুরুল হুদা ডিউক, আহ্বায়ক বেকা মুখপাত্র মোহাম্মদ মাহবুব আলম সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলী ৩১ শে ডিসেম্বর ১৯৭০ ইং সালে সাতক্ষীরা জেলাধীন তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মো. রমজান আলী সরদার, মাতা মিসেস সমেত্তবান বিবি।
পিতা-মাতার স্নেহাশীর্বাদে পড়ালেখা শুরু এবং ক্রমাগত উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। মানবিক শাখা ১৯৮৭ সালে এসএসসি প্রথম বিভাগ, এইচএসসি ১৯৮৯ সালে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। যশোর শিক্ষা বোর্ড হতে স্কলারশীপ পান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৯১ সালে দ্বিতীয় বিভাগে ডিগ্রী পাস করেন। ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাস বিষয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নবম স্থান অধিকার করে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯৭ সালে পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হয় এবং (প্রথম শ্রেণীতে কেউ উত্তীর্ণ হয় নাই)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন শিক্ষা ও চাকুরীতে বৈষম্য প্রতিরোধ সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় তৎকালীন মহামান্য প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুর রহমান বিশ্বাস -এর সহিত বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছিল (যার স্মারক নং- রাস/এসচিব/২/৯৮-১১৯১ তারিখ-২৬/১০/১৯৯৪)। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। সহধর্মিনীর নাম শারাবান তহুরা। এক পুত্র নাম- মো. মোর্তজা তোরাব, দুই যমজ কন্যা ইশরাত আরা মিম ও ইফফাত আরা মম।
কর্মজীবনে তিনি আশাশুনি সরকারি কলেজ, আশাশুনি, সাতক্ষীরা ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ১০ জুন ১৯৯৮ সালে যোগদান করে প্রথম কর্মজীবন শুরু হয়। ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা ও কর্মকে ভালবাসেন তাই বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এ ২৫ মার্চ ১৯৯৯ সালে প্রফেসর আন্ডার অফিসার (পিইউও) হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী ভাটিয়ারী, চট্টগ্রাম থেকে প্রি- কমিশন ট্রেনিং ৬ এপ্রিল ২০০২ ইং থেকে ২০ জুন ২০০২ পর্যন্ত অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন।
২০০৪ সালের ১৭ জুলাই সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন এবং লেফটেন্যান্ট হিসেবে পদোন্নতি পান ২৬ জুলাই ২০০৭। তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান ২৭ অক্টোবর ২০১৪। দীর্ঘদিন যাবৎ সুন্দরবন রেজিমেন্ট ০১ সুন্দরবন ব্যটালিয়ন এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লাটুন সমূহ পরিদর্শনসহ তদারকি করছেন।
তিনি বিএনসিসিতে নিযুক্তির পর থেকেই প্রতি বৎসর বার্ষিক প্রশিক্ষণ অনুশীলন, ব্যাটালিয়ন প্রশিক্ষণ অনুশীলন, ফায়ারিং প্রশিক্ষন অনুশীলন এ সহকারী অফিসার ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ, উপ-অধিনায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। শীতকালীন যৌথ প্রশিক্ষণ ২০০২ এ অংশগ্রহণ করে ৫৫ ব্রিগেডের ডি ব্রিফিং এ মেজর জেনারেল আশফাক এর সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
এ্যাডভান্স লিডারশীপ কোর্স ২০১২ এ সদর দপ্তর বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর উত্তরা, ঢাকায় কোর্স সিনিয়র হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মহান জাতীয় স্বাধীনতা দিবস ও মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ- এ বহুবার অংশগ্রহণ করেছেন। ২০০২ সাল হতে সুন্দরবন রেজিমেন্টর একমাত্র প্যারেড কমান্ডার হিসেবে অদ্যাবধি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
শ্রেষ্ট পিইউও ২০০৩ সাল সুন্দরবন রেজিমেন্ট কর্তৃক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে সাতক্ষীরা জেলার শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে জেলা প্রশাসন, সাতক্ষীরা থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। এটা বিএনসিসি জন্য গৌরবের বিষয়। ২০১০ সাল থেকে সোর্ড নিয়ে প্যারেড করেন। কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ অনুশীলনে ২০২৩ এ Best shooter এবং রেজিমেন্ট ক্যাম্পিং ২০২৪ শে ৪.৫ গ্রুপিং করে Best shooter হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর এর একজন প্যারেড কমান্ডার, Best shooter এবং একজন উচ্চ মানের প্রশিক্ষক হিসেবে প্রত্যেক প্রশিক্ষন অনুশীলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি একজন কর্ম উদ্যেগী ব্যক্তি বিএনসিসি প্রশিক্ষণ দ্বারা প্রভাবিত। লেঃ কর্নেল মো. তৌফিক-ই-ইলাহী, পিএসসি রেজিমেন্ট কমান্ডার তাকে প্যারেড কমান্ডার হিসেবে একটি ডিও লেটার ও একটি ক্রেস্ট প্রদান করেন যার নং পিএফ/২৭১৪/ডিও তাং- ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০১১।
লেঃ কর্নেল তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী পিএসসি রেজিমেন্ট কমান্ডার, সুন্দরবন রেজিমেন্ট, শিরোমনি, খুলনা- সুন্দরবন শিক্ষা সফর উপলক্ষে শিক্ষা সফর পরিচালনার কমান্ডার হিসেবে তাকে একটি স্টিক প্রদান করেন।
তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৬ এ উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে নির্ধারিত হন। ২০১৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে পুরষ্কার প্রাপ্ত ও রাষ্ট্রীয় ভাবে সংবর্ধিত হয়েছেন। মহান বিজয় দিবস প্যারেড -২০১৭ এ বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) বাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ফলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও মাননীয় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা এর সহিত সৌজন্য সাক্ষাতের সুযোগ পান। শ্রীলংকার Hermann Loss Challenge Trophy Camps 2018- এ যোগদান করার লক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর অধিদপ্তর এর একটি চৌকষ দল ২০ অক্টোবর ২০১৮ রোজ শনিবার বেলা ১.৩০ ঢাকা হতে কলম্বোর উদেশ্যে রওনা হন।
ক্যাপ্টেন মো. এছাহক আলী উক্ত দলের একজন সম্মানিত সদস্য ছিলেন। তিনি শ্রীলংকার মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, মাননীয় সশস্ত্র তিন বাহিনীর প্রধানগন, মাননীয় মহাপরিদর্শক পুলিশ এবং Kothalawala Defence University, Srilanka এর মাননীয় উপাচার্য সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
মেজর প্রফেসর মো. বজলুল করিম (অবঃ) সম্পদনায় "বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বির্বতনের ধারায়" বইটি সহযোগি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।এছাড়াও তিনি অসংখ্য সামাজিক কাজের সাথে জড়িত আছেন। তিনি একজন নিবেদিত মানবিক শিক্ষক।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]