প্রেসবিজ্ঞপ্তি: যথাযোগ্য মর্যাদায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ডি. বি. মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ২৫ মার্চ (শুক্রবার) পালিত হয়েছে গণহত্যা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিন¤্র শ্রদ্ধায় নিহতদের স্মরণ, বীরমুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: এমাদুল ইসলামের সভপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলি ও গণহত্যা বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন ব্রহ্মরাজপুর ইউপির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান, স্কুলের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা স ম শহিদুল ইসলাম। স্কুলের সহকারী শিক্ষক এসএম শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক অনুজিৎ কুমার মন্ডল, সহকারী শিক্ষক মো: নজিবুল ইসলাম, শামীমা আক্তার, খালেদা খাতুন, গীতা রানী সাহা, হাফিজুল ইসলাম, মৃনাল কুমার বিশ্বাস, কনক চন্দ্র ঘোষ, ভানুবতী সরকার, আজহারুল ইসলাম, দেবব্রত ঘোষ, হারুন অর রশিদসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলি ও গণহত্যা বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার স ম শহিদুল ইসলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের নিকট সাতক্ষীরার ভোমরা যুদ্ধ, বুধহাটা, কমিলমুনিসহ বেশ কয়েকটি যুদ্ধের বর্ণনা করেন। এছাড়া ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের কর্তৃক তার পরিবারের উপর হামলা ও নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমার ভগ্নিপতি তৎকালীন পাইকগাছা-কয়রা-আশাশুনির এমএনএ আব্দুল গফুর ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক। সেকারণে তিনি আমাদের বাড়িতে বসে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ করতেন। এ খবরটি স্থানীয় রাজাকাররা খান সেনাদের কাছে পৌছে দেয়। রাজাকারদের সহযোগিতায় খানসেনারা আমাদের বাড়ি আক্রমন করে। তারা আমার বড়ভাই নজরুল ইসলাম হারুকে ধরে নির্মম নির্যাতন চালায়। আমার বড়ভাই নজরুল ইসলাম হারুকে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নির্যাতন করে। বেয়নেট দিয়ে তার দাঁত ভেঙে দেয়। গোটা শরীর রক্তাক্ত করে। শুধু তাতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। খান সেনারা তাদের জিপের পিছনে আমার ভাইকে বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে মৃত ভেবে সাতক্ষীরার বাঁকাল ব্রিজের কাছে ফেলে রেখে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেছিলেন।
সাবেক কমান্ডার শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, রাজাকার সহযোগিতা না করলে দেশ স্বাধীন করতে তিন মাসও লাগতো না। রাজাকারদের সহযোগিতায় হানাদার বাহিনী এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের উপর নির্যাতন চালায়। তারা বেছে বেছে এ দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশসহ সাধারণ নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করেছিল।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহŸানে সাড়া দিয়ে দেশকে শত্রæমুক্ত করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে তারুণ্যের উচ্ছ¡াসকে উপেক্ষা করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আরও আগেই উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতো। তাঁরই সুযোগ্য তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামী প্রজন্ম এগিয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]