দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৯০ হাজার। যেখানে বর্তমানে দেশে ১৫ ও এর বেশি বয়সী কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠী তথা মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার। গত দুই বছরের বেশি সময়ে দেশের শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি। সেই সঙ্গে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যায়ও হেরফের হয়নি।
অবশ্য ২০২৩ সাল শেষে গড় বেকারের সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৭০ হাজার। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা বেশি। তবে লিঙ্গভেদে বেকারের চিত্রে দেখা গেছে, নারী বেকারের সংখ্যা কমেছে, বিপরীতে পুরুষ বেকার বেড়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে শ্রমশক্তি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। এই জরিপ প্রতিবেদনে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত (প্রথম প্রান্তিক) বেকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুসারে, সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পাননি এবং এক মাস ধরে কাজপ্রত্যাশী ছিলেন, এমন কর্মক্ষম ব্যক্তি বেকার হিসেবে গণ্য হবেন। বিবিএস আইএলওর সংজ্ঞা অনুসারেই এই জরিপ করে থাকে।
বিবিএসের জরিপ অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে বেকার ছিলেন ২৫ লাখ ৯০ হাজার জন। সে হিসাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে বেকারের হার ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। যেখানে ২০২৩ সালের গড় ছিল ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ছিল ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়েছে, নারী বেকার কমেছে। গত মার্চ শেষে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৪০ হাজার। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে (মার্চ-জানুয়ারি) এই সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ১০ হাজার। তবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ হাজার নারী বেকার কমেছে। এখন নারী বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ৫০ হাজার। গত বছর একই সময় ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, শ্রমশক্তিতে এখন ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার নারী-পুরুষ আছেন। তাঁদের মধ্যে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার লোক কর্মে নিয়োজিত। বাকিরা বেকার।
এ ছাড়া শ্রমশক্তির বাইরে বিশাল জনগোষ্ঠী আছেন—তাঁরা কর্মে নিয়োজিত নন, আবার বেকার হিসেবেও বিবেচিত নয়। এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৮২ লাখ ৬০ হাজার। তাঁরা মূলত সাধারণ ছাত্র, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক নারী-পুরুষ, কাজ করতে অক্ষম ব্যক্তি, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং কর্মে নিয়োজিত নন বা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক গৃহিণী।
বছরের বিভিন্ন সময়ে বেকারত্বের হারে হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে নানা বিষয় সম্পর্কিত। এর অন্যতম একটি নিয়ামক মৌসুম। যেমন—শীত ও বর্ষা মৌসুমে কাজের সুযোগ কম থাকে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, দেশে যুব শ্রমশক্তি (১৫–২৯ বছর বয়সী) ধারাবাহিকভাবে কমছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই সংখ্যা ২ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার। গত বছর ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার। আর ২০২২ সালে ছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার।
দেশে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর ৪৫ শতাংশই কৃষিতে নিয়োজিত। আর শিল্পে নিয়োজিত ১৮ শতাংশ, আর সেবা খাতে নিয়োজিত ৩৭ শতাংশ। ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত কৃষি খাতে কর্মে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা সেভাবে কমেনি। শিল্প ও সেবা খাতে কর্মে নিয়োজিতদের সংখ্যাও বেড়েছে সামান্য।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]