মহামারী করোনাভাইরাস যখন ভারতেপ্রথম থাবা বসাচ্ছিল, তখন বহু সংখ্যক করোনা রোগীকে চিহ্নিতই করা যায়নি। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন দেশটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, বহু করোনা রোগীকে প্রথমে চিহ্নিতই করা যায়নি। কিন্তু কেন! বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রথমে ধরেই নেওয়া হয়েছিল করোনা মানেই রোগীর শরীরে প্রথম উপসর্গ হবে জ্বর।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তা নয়, বহু করোনা রোগীর ক্ষেত্রেই জ্বরের উপসর্গ ছিলই না।
আইসিএমআর এর গবেষণা শাখা ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিকেল রিসার্চ সম্প্রতি একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। ‘Clinico-demographic profile & hospital outcomes of Covid-19 patients admitted at a tertiary care centre in north India’ শীর্ষক এই সমীক্ষাটি ২৩ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল টানা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির এইমস হাসপাতালে। বেছে নেওয়া হয়েছিল মোট ১৪৪ জন করোনা রোগীকে।
সমীক্ষার পরিসংখ্যান বিচার করে দেখা যায় মাত্র ১৭ শতাংশ করোনা রোগীর প্রধান উপসর্গ ছিল জ্বর।
চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়ার নেতৃত্বে হওয়া ওই গবষণায় দেখা যায়, ভারতের করোনা রোগীদের প্রধান উপসর্গের সঙ্গে অন্যান্য দেশের করোনা রোগীদের উপসর্গের ফারাক রয়েছে। চীনের দিকে তাকালে দেখা যাবে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৪৪ শতাংশের শরীরেই জ্বর ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর জ্বর দেখা দেয় ৮৮ শতাংশের শরীরেই। কিন্তু এইমস-এ ভর্তি হওয়া মোট করোনা রোগীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ রোগীর শরীরে জ্বর ছিল।
৪৪ শতাংশ রোগী ছিলেন উপসর্গহীন।
এই উপসর্গহীনতার পরিসংখ্যান একদিকে যেমন আশাপ্রদ, অন্যদিকে ততটাই ভয়ের। মনে করা হচ্ছে, অনেকে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে নিজে থেকে, অন্যদিকে এই উপসর্গহীন রোগীরাই বহুক্ষেত্রে নিঃশব্দে অজান্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। মার্চ-এপ্রিলে এভাবেই সংক্রমিত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ, ধারণা বিজ্ঞানীদের।
এই ১৪৪ জন রোগীর মধ্যে ৯৩.১ শতাংশ ছিলেন পুরুষ। এদের মধ্যে ১০ শতাংশ ছিলেন বিদেশি পর্যটক। ২৩ জন কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত হন। যাদের শরীরে উপসর্গ ছিল তাদের মধ্যে একটা বেশি অংশই সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন। জ্বর প্রায় ছিল না বললেই চলে। এদের ওপর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রয়োগ করেন চিকিৎসকরা।
রণদীপ গুলেরিয়া বলছেন, "আসলে প্রতিটা দিনই একটা করে শিক্ষার দিন। করোনা আমাদের চিন্তার থেকেও বেশি পরিকল্পিত আক্রমণ চালায়। এমনও হয়েছে কারও স্ট্রোক হয়েছে বা হার্ট অ্যাটাক। কিন্তু পরে ধরা পড়েছে তিনি করোনা আক্রান্ত। এমনও হয়েছে কনজেনটিভাইটিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরে করোনা লুকিয়ে ছিল।" সূত্র: নিউজ১৮
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]