করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদে বন্ধ জাতীয় চিড়িয়াখানা
করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন প্রাণী নতুন করে প্রজনন ঘটিয়েছে। বিভিন্ন প্রাণীর আশ্রয়স্থল সংস্কার করা হয়েছে। সীমানাজুড়ে দর্শনার্থীদের চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মনোরম পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
তবে বর্তমান মহামারি পরিস্থিতির কারণে এবার ঈদুল ফিতরেও চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মে) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকায় খাঁচায় বন্দি প্রাণীগুলো নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মে’র মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর ৪২টি বাচ্চার জন্ম হয়েছে। তার মধ্যে জলহস্তির একটি, জেব্রার দুটি, আফ্রিকার হাতির দুটি বাচ্চা রয়েছে। এ ছাড়াও বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইমু পাখি, ময়ূরসহ বিভিন্ন ধরনের বকের নতুন ডিমের মাধ্যমে বাচ্চা ফোটানো হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে গরমে চিড়িয়াখানার সব প্রাণীর হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হওয়ায় পানিতে ভিটামিন ‘ডি’ প্রস্তুত করে পান করানো হচ্ছে। নিয়মিত গোসল করানো, সেডের ভেতরে-বাইরে পরিষ্কার করা হচ্ছে। দৈনন্দিন খাবার প্রণালির সঙ্গে পানির অভাব পূরণ করে এমন সবজি খাওয়ানো হচ্ছে। বড় প্রাণীগুলোর মধ্যে কোনটি অসুস্থ হলে নমুনা নিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। জনবল সঙ্কট থাকলেও কর্মচারীরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় ১৮৬ একর জায়গা নিয়ে গঠিত মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসেন হাজারও দর্শনার্থী। চিড়িয়াখানায় রয়েছে মাংসাশী আট প্রজাতির ৩৮টি প্রাণী, ১৯ প্রজাতীর বৃহৎ প্রাণী (তৃণভোজী) ২৭১টি, ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণী ১৯৮টি।
এ ছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতির সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির ১ হাজার ১৬২টি পাখি, অ্যাকুরিয়ামে রক্ষিত ১৩৬টি মৎস প্রজাতির ২ হাজার ৬২৭টি প্রাণী। সবমিলিয়ে রয়েছে ১৩৭টি পশু-পাখির খাঁচা।
চিড়িয়াখানার পুরো সীমানাজুড়ে দর্শনার্থীদের জন্য উপযোগী রাস্তা নির্মাণ ও পশুপাখি রাখার ভাঙা সেড সংস্কার করা হচ্ছে। ভেতরে যেন এক রকম বন্য পরিবেশে প্রাণীকূল বেড়ে উঠছে। স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করছে। বড় প্রাণীগুলোকেও সুখের গর্জন করতে শোনা যায়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. আব্দুল লতীফ বলেন, জাতীয় চিড়িয়াখানাকে আরও আকর্ষণীয় ও বিনোদনমুখর করে তুলতে বিদেশ থেকে নতুন নতুন প্রাণী আনা হয়েছে। বর্তমানে এসব প্রাণীর প্রজনন ঘটানের চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি অনেক প্রাণীর বাচ্চা হয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থায় প্রাণীর ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকায় এখানে বন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রাণীদের কেউ বিরক্ত করছে না। নিজেদের মতো খেয়ে-খেলে দিন পার করতে পারছে বলে সুস্থাভাবে এগুলো দ্রুত বেড়ে উঠছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)