আদালত অবমাননা করে সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলায় সরুত আলী নামে এক বৃদ্ধার বসতবাড়ি ও দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল সাতটার সময় উপজেলার কিসমত ইলিশপুর গ্রামের বাগুড়ী বেলতলা বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সুরুত আলী শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাতে কলারোয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না নেওয়ায় গত রবিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান এর কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিবাদীরা পূর্বে থেকেই সরুত আলীর সাথে জমি নিয়ে বিরোধ করে আসছিলো। সুরুত আলী ভূমিহীন হওয়ায় স্বাধীনতার পর থেকে কিসমত ইলিশপুর মৌজার এসএ ২০৩ নং আর এস ৬৭৯ নং দাগে ০৭ শতক সরকারি খাস জায়গায় বসবাস করে আসিতেছে। একই গ্রামের মাজেদ পালোয়ান ভূমিহীন না হওয়ার সত্বেও বিভিন্ন সময় জোরপূর্বক এই জমি দখলের পাঁয়তারা করেন। এছাড়াও একই এলাকার আব্দুল করিম নামে আরও এক ব্যক্তি ঐ জমির দাবিদার হিসাবে সাতক্ষীরা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) মাজেদ পালোয়ান ও তার দুই ছেলে আনারুল ইসলাম, ও কবিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে সুরুত আলীর দোকান ও বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় বাধা দিলে সুরুত আলীসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে মারধর করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাজেদ পালোয়ান ও তার দুই ছেলে আনারুল ইসলাম এবং কবিরুল ইসলাম এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় পূর্বেও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। মাজেদ পালোয়ান জামায়াত-বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। একাধিক মামলার আসামী হওয়ার সত্বেও তাকে আইনের আওতায় আনা যায় না। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, জমি দখল ও সরকারি গাছ কাটাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
সুরুত আলী জানান, আমরা পরিবার খুবিই অসহায়, আমার পরিবারে উপার্জন করার মত কেউ নেই, যে ছিলো, সে আমার বড় ছেলে, বিগত ১৩/১৪ সালের জামায়াত শিবিরের পের্টোল বোমার আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এখন আমাদের দেখার মত কেউ নেই। স্বাধীনতার পর থেকে এই জমিতে আমি পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি।
কিন্তু গত শুক্রবার মাজেদ পালোয়ান, তার দুই ছেলে আনারুল ইসলাম ও কবিরুল ইসলামসহ ৩০/৩৫ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দা, কুড়াল ও লাঠি নিয়ে জমি দখলের জন্য আমার বসত বাড়িতে ও দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমরা বাঁধা দিতে গেলে আমার স্ত্রী, ছেলে, ও আমার বৌমাসহ সকলকে মারধর করে।
এতো সব ঘটনার সত্যতা জানার জন্য অভিযুক্ত মাজেদ পালোয়ানের বাড়িতে গেলে তাহার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বলেন, আমার স্বামী এবং ছেলেরা বাড়িতে নেই। আপনারা ঐ সব ভিডিও করে যা ইচ্ছা, তাই করেন।
এবিষয়ে কলারোয়া থানার (ওসি) তদন্ত তাইজুল ইসলাম জানান, থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, পাশাপাশি ভিকটিম সুরত আলী সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার এর কাছেও অভিযোগ করেছেন। যা তদন্ত করে থানার (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানকে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]