কলারোয়া(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যা হলেই বাড়ছে পোকার উৎপাত। বার্ষিক পরীক্ষা কে সামনে রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা ব্যাপক ক্ষতি।লাইট জ্বালিয়েই পোকার উৎপাতে অতিষ্ট কলারোয়ার জনজীবন। বাসা বাড়ী থেকে শুরু করে দোকান, অফিস, আদালত সকল জায়গায় যেন এখন পোকার দখলে। কেউ বলছে কারেন্ট পোকা, কেউ বলছে গান্ধী পোকা। এর মধ্যে শুরু হতে চলেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা। কিন্তু সন্ধ্যা হলে লাইট জ্বালিয়ে বই পড়ার কোন উপায় নাই।
শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা বলছে পোকার যন্ত্রণায় সব লাইট বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। বাচ্চারা ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে বাচ্চারা পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করতে পারবে না। এমনটি আশঙ্কা করছেন সচেতন অভিভাবকরা।
কলারোয়া এমআর ফাউন্ডেশান একাডেমির প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইলমা হোসেন জেমি বলেন, পরীক্ষার সময় সন্ধ্যার পরে আমি বই পড়তে পারছি না। চোখে মুখে পোকা যাচ্ছে। এই জন্য লাইট বন্ধ করে বসে আছি। সকালে বাংলা পরীক্ষা তাহলে আমার কি হবে? এই শিক্ষার্থীর মা জেসমিন খাতুন বলেন, বিকালে ছেলে মেয়েরা একটু খেলাধুলা করে। সন্ধ্যার সময় যখন বই নিয়ে পড়তে বসে তখন পোকার যন্ত্রণায় আর বাচ্চারা বই পড়তে পারছে না। এমনকি রাতে খাওয়া দাওয়া করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে পৌরসভা সহ উপজেলার সকল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এই পোকার অত্যাচারে ব্যবসায়ীরা অনেকে সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
এ বিষয়ে কলারোয়া বাজারের ফল ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই কোথা থেকে যেন এই পোকা উদয় হয়। এই পোকার যন্ত্রণায় আমি রাগে দোকান বন্ধ করে দুই দিন বাড়ীতে চলে গেছি। আর এখন দোকানের ভেতরের লাইট বন্ধ করে বাইরের লাইট জ্বালিয়ে বেচাকেনা করছি।
একদিকে পোকার উৎপাত অন্য দিকে হরতাল, অবরোধ ক্রেতা একাবারেই শূণ্যের কোঠায় বলা যায়। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনার শঙ্কাবোধ করছেন তিনি। উপজেলা জামে মসজিদে নামায পড়তে আসা এক মুসুল্লি ওযু বানানোর সময় পোকার উৎপাতে বলেন, এই পোকা মনে হয় আল্লাহর গজব ছাড়া কিছু নয়। এক ঔষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, গত দুই দিনে মোটরবাইক চালানোর সময় চোখে পোকা ঢোকার কারনে দুইবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া লেগেছে। এখন সন্ধ্যার পর বাইরে যাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে গেছে। পোকার উপদ্রব এভাবে থাকলে এ মাসে বিক্রির টার্গেট পূরন করা কঠিন হয়ে যাবে।
মির্জাপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল বাজার করে বাড়ী ফেরার সময় চোখে একটা পোকা ঢুকে যায়। অনেক কষ্ট করে বের করতে পারলেও সারারাত যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে। অনেকে এই পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে লাইটের পাশে বিভিন্ন গাছের লতাপাতা টানিয়ে রাখছেন কিন্তু সেটাতেও মিলছে কোন ফল।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জিয়াউল হক বলেন, এই পোকার বসবাস স্যাঁতসেঁতে ও ভ্যাপসা গরমে ধান ক্ষেতে হয়ে থাকে। এখন সেই পরিবেশ মাঠে না পেয়ে কারেন্টের আলোয় চলে আসছে। এদের জীবনকাল খুব বেশী না। খুব তাড়াতাড়ি এই পোকার উপদ্রব কমে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]