প্রচন্ড তাপদাহে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার পোল্ট্রি খামারীরা পড়েছেন মহাবিপদে। প্রতিটি পোল্ট্রি খামারে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি মুরগী হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। এর ফলে চলতি মৌসূমে কলারোয়ার পোল্ট্রি খামারীদের ব্যাপক লোকসানে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কলারোয়া উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুদাম নন্দী জানান, ‘উপজেলায় প্রায় ১২শ’র মতো পোল্ট্রি ও লেয়ার মুরগীর খামার রয়েছে। এর মধ্যে দেশি জাতের মৃুরগীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার, বয়লার মুরগীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার এবং লেয়ার মুরগীর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের মতো। বিগত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে মানুষের পাশাপাশি বয়লার এবং লেয়ার মুরগী হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে।’
তিনি জানান, ‘০ থেকে ২১ দিনের পোল্ট্রি মৃুরগী হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।’
উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের কাঁকডাঙ্গা গ্রামের কুবরা পোল্ট্রি ফার্মের সত্বাধিকারী খাদিজাতুল কুবরা জানান, ‘গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে ৫০০ সেডের ফার্মের খামারে ২২ থেকে ২৫ দিন বয়সী মুরগী গড়ে ৮ থেকে ১০টি প্রতিদিন মারা গেছে। এ থেকে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১৫’শ থেকে ১৮’শ টাকা।’
বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, সাধারণত যে সমস্ত খামারে মুরগীর বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন সেই সমস্ত খামারের মুরগীগুলো আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। হিট স্ট্রোক থেকে মুরগী রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন সকালে বায়োভেট পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো উচিত। এছাড়া দুপুরে হাইড্রোসল লিকুইড পানির সাথে মিশিয়ে মুরগীর গায়ে স্প্রে করতে হবে।’
উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুদাম নন্দী জানান, ‘যে সমস্ত খামারীগণ বেশি বেশী স্টেরয়েড জাতীয় খাদ্য খাওয়ান সেই সমস্ত খামারের মুরগীগুলো হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি।’
তিনি আরো জানান, ‘খামারের মুরগীগুলো হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষার জন্য গ্লুকোজ, স্যালাইন, নিরাপদ ঠান্ডা পানি বার বার খাওয়াতে হবে। ইলেকট্রিক ফ্যানের বাতাস দিতে হবে। খামারের চালের উপর চটের বস্তা দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।’
তিনি জানান, ‘সাধারণত আমাদের দেশের বয়লার মুরগীগুলো ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে কিন্ত গত কয়েক দিন ধরে কলারোয়া এলাকায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়ািস থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠা নামা করছে। প্রচন্ড তাপমাত্রার কারণে হিট স্ট্রোকে মুরগীর মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এজন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে খামারীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
এদিকে, এরূপ পরিস্থিতিতে খামারীদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে বলে আশংকা করছেন তারা। এটি অব্যাহত থাকলে ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নেয়া এবং খাদ্য ও পোল্ট্রি ঔষধের দোকান থেকে বাকী নেয়া খামারীরা দেনার দায়ে খামার বন্ধ করে দেয়ারও চিন্তা করছেন বলে জানান।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]