সাতক্ষীরা কলারোয়ার জালালাবাদ গ্রামের আলোচিত সেই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী সানচিতা হোসেন সেজ্যোতি (১৩) হত্যার ৭ দিন পরে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হয়। থানা পুলিশের তৎপরতায় ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মূল রহস্য উদঘাটন করে প্রেমিক আব্দুর রহমান (২০) কে গ্রেফতার করেছে কলারোয়া থানা পুলিশ। আলোচিত এ সেজ্যোতির মৃতদেহ গত সোমবার ২৮ মার্চে ভোর সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জালালাবাদ মাষ্টার পাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন সরদারের কুল বাগানের ড্রেন থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সানচিতা হোসেন সেজ্যোতির মা লায়লা পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে কলারোয়া থানায় ৪৫ নম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যার এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত শেষে সেজ্যোতির প্রেমিক আব্দুর রহমানকে ৭ দিন পরে গতকাল রবিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলা পৌরসদরের আফজালের মোড় এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর এসআই সোহারব হোসেন।
ঘাতক প্রেমিক আব্দুর রহমান একই গ্রামের পাশাপাশি বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের ছেলে ও হাবিবুল ইসলাম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ।
জালালাবাদ মাষ্টার পাড়ার ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান বলেন, গত ছয় মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের কারণে আব্দুর রহমান নামের ওই যুবকের সাথে পালিয়ে যায় সেজ্যোতি। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবার বাদী হয়ে থানা পুলিশের মাধ্যমে আপোষ মীমাংসা করে সেজ্যোতিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে রাখে। গত ২৮ তারিখ সকালে ড্রেনে উপুড় করা অবস্থায় সেজ্যোতির মরদেহ পাওয়া গেছে এমন সংবাদ পেয়ে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে থানা-পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তদন্ত করেছে।’
কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ ভারপ্রাপ্ত ওসি নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় সেজ্যোতির সাথে দীর্ঘদিনের গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল প্রতিবেশী আব্দুর রহমানের সাথে। আব্দুর রহমান জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেছে সেজ্যোতির সাথে গভীর প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও অন্য ছেলেদের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সেজ্যোতি। অন্য ছেলেদের সাথে সেজ্যোতির প্রেমের এ বিষয়টা মানতে পারেনি তার প্রেমিক আব্দুর রহমান৷ ঘটনার দিন সোমবার ২৭ তারিখ রাত ৯টার দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুজনে। সেজ্যোতির মেঝ দাদার পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শের মধ্যে কোন একটি বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে মনোমালিন্য দেখা দিলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আব্দুর রহমান সেজ্যোতিকে ধাক্কা দিলে দেওয়ালে পড়ে জ্ঞান হারায় সেজ্যোতি। তাৎক্ষণিক জ্ঞান না ফেরায় ঘটনার ধামাচাপা দিতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সেজুতিকে শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যা করে মাষ্টার পাড়ার মাঠে আলাউদ্দিন সরদারের কুল বাগানের ড্রেনে সেজ্যোতির মৃতদেহ ফেলে রাখে।
থানা অফিসার ইনচার্জ ভারপ্রাপ্ত ওসি আরও বলেন, হত্যা করে মৃতদেহ গোপন করার অপরাধে ৩০২/৩৪/২০১ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারার ৪৫ নম্বর অজ্ঞাত আসামি মামলায় জালালাবাদ মাষ্টার পাড়ার আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমান (২০)কে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আটক করা হয়েছে৷ তাকে মামলা আইনে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]