কলারোয়া(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে পরেছে লতাটা,সজনে ফুলে ভরে গেছে গাছটা,আর আমি ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি।খোকা তুই কবে আসবি? কবে ছুটি?’
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তার এ কবিতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিলেন একজন ভাষা শহীদের মায়ের আকুতি।কুমড়ো ফুল, সজনে ডাঁটা, ডালের বড়ি আবহমান বাংলার ঐতিহ্য। আর এ ঐতিহ্য মনে করিয়ে দেয় ভাষার কথা, দেশের প্রতি মমত্ববোধের কথা।
অপরদিকে, অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা সজনে সবার কাছেই খাদ্য হিসেবে বেশ প্রিয়। এখন সজনে গাছে ফুল আসার মৌসুম। ঋতুবৈচিত্রের এই বাংলাদেশে একেক ঋতুতে একেক রূপ নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতি। শীতের শেষ ও বসন্তের আগমনীতে গাছে গাছে শিমুল পলাশের সাথে সাজনে ফুলগুলো প্রকৃতিকে সাজিয়েছে আপন মহিমায়।
প্রাকৃতিক সোন্দর্য নিয়ে সাদা ফুলের বর্ণিল সাজে সেজেছে উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডার খ্যাত কলারোয়া উপজেলার সজিনা গাছগুলো। প্রকৃতি সেজেছে যেন তার আপন মহিমায়। বাড়ির আনাচে-কানাচে ও রাস্তার পাশে থাকা সজিনার গাছগুলো থোকায় থোকায় সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। মৌ মৌ করছে চারপাশ। সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আর ফুল।
এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝরে পড়ে। তাই পাতা শুন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলেই মহিত হয়। সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ। অলৌকিক গাছ হিসেবে সজিনা পরিচিত। কলারোয়া পৌরসভার সামনে ও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সজনের সাদা ফুলে ছেয়ে গেছে ।রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায়, পুকুর পাড়ে লাগানো গাছে গাছে ক’দিন পরেই বাতাসে দোল খাবে সজনে। প্রত্যন্ত অঞ্চলজুড়ে যা মানুষের অতি প্রিয় খাবার।
সজনেচাষী দীপক ঘোষ বলেন‘ এখন অনেকে বাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষ করে হাট-বাজারে বিক্রি করেন। প্রথমদিকে দামটা একটু বেশি থাকলেও পরে কমতে শুরু করে। ’শুধু গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছেই নয়, শহরের মানুষের কাছেও সজনে ডাঁটার ব্যাপক কদর রয়েছে। তাছাড গ্রাম বাংলার সর্বত্র সজনে, সজনের পাতা ও ফুল নি:সন্দেহে একটি পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার।
সজনে গাছের ছাল ও পাতা ঔষধি হিসেবে ব্যবহারও বহুল পরিচিত। বিনা পরিশ্রমে শুধু একটি ডাল সংগ্রহ বাড়ির আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে লাগিয়ে রাখলেই কিছু দিনের মধ্যেই গাছ বড় হয়ে যায়। দেখতেও সজনে গাছ খুবই দৃষ্টিনন্দন। সজনে গাছের অতুলনীয় গুণ বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলার ১২টি ইউনিয়িন ও ১টি পৌরসভার সব অঞ্চলে শত শত সজনে ডাল রোপণ করে নিজ বসতবাড়িতে।
এদিকে, উপজেলার দেয়াড়া ঘোষ পাড়ার সিংহভাগ বাড়িতে সজনে চাষ করে থাকে। বাকী যে পরিবারগুলোতে সজনে গাছ নেই, গত বছর সেই পরিবারগুলোতেও সজনে গাছ লাগানোর জন্য এলাকার কৃষক, যুবক ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে গ্রামের মানুষের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন।
যাদের বাড়িতে সজনে গাছ আছে সেখান থেকে ২টি ডাল সংগ্রহ করে যাদের বাড়িতে নেই সেখানে রোপণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হোসেন বলেন, সজনে ডাটা ঔষধে গুনে ভরা একটি সবজি।তিনি সজনে ডাল লাগানো কার্যক্রমকে বাস্তবায়ন করতে এলাকার তরুন, যুবক ও কৃষকদের সাথে সজনে গাছ এর গুণাগুণ ও সজনে খাওয়ার গুরুত্বারোপ করেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]