কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউপির চেয়ারম্যান কর্তৃক ভিটাবাড়ির জমি দখলের চেষ্টা।
জমি দখল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন উপজেলার হেলতলার খলসি গ্রামের মো. আব্দুল মাজেদের পরিবার। বসতভিটার বেড়া ভেঙ্গে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দখলের ভিডিও করতে গেলে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত (৬ জুলাই) এই ঘটনা ঘটে। পরিবারটি চেয়ারম্যান কর্তৃক শ্লীতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
উল্লেখ্য হেলাতলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন আব্দুল মাজেদের বড় ভাই আবু তালেব সরদার। বর্তমান চেয়ারম্যান মোয়াজ্জ্বেম হোসেনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। পূূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ভিটার জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জমি দখলের করতে গেলে ভুক্তভোগী পরিবারটি সেটির ভিডিও করলে তাদের মোবাইল ছিনিয়ে নিচ্ছেন। এক পর্যায়ে জোর পূর্বক আব্দুল মাজেদের ছোট মেয়ের কাছ থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। চেয়ারম্যান বলতে থাকেন, এই ভিডিও করে কে? ফোন রাখ বলে ফোনটি ছিনিয়ে নেন। এ সময়ে অশোভন আচরণ করা হয় পরিবারটির সাথে।
বসতভিটা দখলের সময় পরিবারটির সদস্যরা চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি ইউনিয়নের অভিভাবক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এর জবাবে চেয়ারম্যান উচ্চস্বরে বলেন, হ্যাঁ হারিয়েছি। বর্তমানে আতংকিত অসহায় পরিবারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল মাজেদ স্থানীয় হেলাতলা আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ২০১৭ সাল থেকে তিনি অসুস্থ্য।
তার বড় মেয়ে তাহেরা খাতুন জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে খলসি গ্রামের ৩৪ শতক জমি ক্রয় করেন। তখন থেকেই তিনি এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবেই বসবাসের চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিন্তু চারপাশের সীমানা নিয়ে বিবাদ চলার কারনে সেটি সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকবার আমিনের মাধ্যমে জমির সীমানা নির্ধারণ করা হলেও কেউ সেটা মানতে চায়নি। যার ফলে পরবর্তীতে আবারো ঝামেলা দেখা দেয়। এই সমস্যার সমাধান করার জন্যই আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বর, জমির সীমানা সংলগ্ন সকল জমির মালিক ও গ্রামের কয়েকজন ব্যাক্তি সহ সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে আমিনের মাধ্যমে জমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়, যা সবাই মেনেও নেয়।
এসময় ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় ৩ শতকের মতো জমি রাস্তায় পাওনা হয়। রাস্তার অপর প্রান্তে থাকা পুকুরের পাড় ভেঙে আমাদের জমিতে চলে এসেছে। তখন আমরা জমি দখল নিলে পুরো রাস্তাই বন্ধ হয়ে যেত। এমতাবস্থায় চেয়ারম্যান সাহেব বলেন, আমরা যখন রাস্তা নির্মাণ করবো তখন আপনারা আপনাদের জমিটা বর্ধিত করে নিবেন। সে অনুযায়ী আমরা রাস্তা বাধাই করার পর রাস্তা সহ আরো এক হাত জায়গা ছেড়ে দিয়ে আমরা বেড়া দিয়ে আমাদের জায়গাটা ঘিরে দেই এবং সেখানে কিছু গাছ লাগাই। রাস্তায় মাটি দেওয়ার সময় ও মেম্বর সাহেব বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পর জমি দখলে নিতে। কিন্তু দখলে নেওয়া ১০-১২ দিন পরই চেয়ারম্যান মেম্বর ও তাদের দলবল বেড়া উচ্ছেদ করে। তারা আমাদের সাথে কোনো সমাধানেও যাওয়ার চেষ্টা করেনি। তাদের এই কর্মকাণ্ডের প্রমান রেকর্ড করতে গেলে তারা পার্সোনাল ফোন ও কেড়েনেয়।
অত্যন্ত খারাপ ব্যাবহার করে। যেটা একজন জনপ্রতিনিধির নিকট কাম্য নয়। এখন যেহেতু এটা আমাদের কেনা জমি তাই আমরা জমির ম্যাপ ও দলিল অনুযায়ী যথাযথ সীমানা নির্ধারণ করে প্রাচীর দিতে চাই। বর্তমানে আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই ঘটনার জন্য পরিবারটি সাতক্ষীরার এসপি, কলারোয়া থানার ওসির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান মোয়াজ্বেম হোসেন অত্যন্ত ক্ষমতাধর। পরিবারটির বসতভিটার বেড়া ভেঙ্গে দিলে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মোয়াজ্জ্বমে হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]