সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে অপরকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন মাদক কারবারি তবিবর রহমান। এমনটাই জানালো কলারোয়া থানা পুলিশ।
তবিবর রহমান (৪২) উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মোড়লের ছেলে। পুলিশ তাকে ও তার সহযোগী গয়ড়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী যশোরের শার্শা থানার কায়বা গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে সাগর আহমেদ (২১) কে গ্রেপ্তার করেছে।
চন্দনপুর কলেজ মোড়ে অবস্থিত মিজানুর রহমানের 'গনি মিষ্টান্ন ভান্ডারে' বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যার জের ধরে গনি মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমানের সাথে তবিবর রহমানের বিরোধ চলে আসছিলো। এর জের ধরে মাদক মামলায় ফাঁসানোর জন্য তবিবর রহমান তার সহযোগী সাগর আহমেদকে দিয়ে ৪০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ওই মিষ্টান্ন ভান্ডারে রেখে দিয়ে আসে।
পরে মিজানুর রহমান ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে পুলিশকে গোপনে খবর দেয় তবিবর রহমান। তার কথা মতো কলারোয়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান, এস.আই জসীমউদ্দীন, আবু সাঈদ, আব্দুল বাকি, এ.এস.আই জসিমউদ্দিন, সিরাজুল ইসলাম, মামুনুর রশিদসহ পুলিশের একটি টিম মিজানুর রহমানের মিষ্টান্ন ভান্ডারে তল্লাশি চালিয়ে ৪০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন। তথ্য মাফিক সাগর আহমেদ গ্রেপ্তার হলে একপর্যায়ে এ কাজটি তবিবর ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে।
পুলিশ তবিবরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার এবং ১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে।
তবিবর সবার সামনেই স্বীকার করেন যে, মিজানুরকে ফাঁসাতেই এ নাটক সাজিয়েছে সে। সে নিজেকে পুলিশের সোর্স বলেও দাবি করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কলারোয়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, 'মিজানুর রহমানকে ফাঁসানোর জন্য তবিবর নিজেই সাগর আহমেদকে দিয়ে ইয়াবার মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মাদক আইনে মামলার প্রস্ততি চলছে।'
উল্লেখ্য, গয়ড়া বাজার এলাকায় মাদক, অস্ত্র ও অবৈধ নানান চোরাচালান কারবার করে আসছে একাধিক চিহ্নিত চোরাকারবারি দল। সেখানে রীতিমতো তাদের চোরাচালান অফিস ও রেস্ট হাউজও আছে। তাদের অনেকের নামের সাথে 'ঘাট', 'ফেন্সি', 'বাবা (ইয়াবা)', 'ডাল' ইত্যাদি উপাধি জুড়ে রয়েছে। চোরাচালান সিন্ডিকেটের ওই একাধিক চক্রের শীর্ষ ব্যক্তিদের বাড়ি গয়ড়ার গা ঘেঁষে শার্শার কায়বা গ্রামে। তবে তাদের দিনরাত অবস্থান, কুকর্ম চলে চন্দনপুর ইউনিয়ন জুড়ে। কয়েক বছরের ব্যবধানে তারা হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। কুঁড়ে ঘর থেকে টাইলসের প্রাসাদোপম বাড়ি, একাধিক দামি মোটরসাইকেল, প্রাইভেট-মাইক্রো তো হয়েছেই পাশাপাশি টাকার গরমে ভাসেন তারা। কতিপয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজে রাখা তাদের চিরাচরিত স্বভাব। তাদের অর্থায়নে কায়বা ও চন্দনপুর ইউনিয়নের গেলো একাধিক ইউপি নির্বাচনে কয়েকজন চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বলে ওই এলাকার প্রায় সকলেরই জানা। তাদের কেউ কেউ বিজয়ীও হয়েছেন। মূলত তাদের ছত্রছায়ায় কায়বা-চন্দনপুর ইউনিয়ন জুড়ে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট বিভিন্ন মাদকদ্রব্য, অবৈধ অস্ত্র ও চোরাচালান করে থাকেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]