‘কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে লতাটা, সজনে ডাটায় ভরে গেছে গাছটা’। কবির কবিতায় প্রাণ ও প্রকৃতির সৌন্দর্য্য আমাদের চোখে ধরা দেয়। সজনে ডাটা, ফুল নিয়ে আমাদের কাব্য ও সাহিত্যে অনেক কথায় লেখা হয়েছে। আমাদের গ্রাম বাংলার সর্বত্র সজনে, সজনের পাতা ও ফুল নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার। সজনে গাছের ছাল ও পাতা ঔষধি হিসেবে ব্যবহারও বহুল পরিচিত। বিনা পরিশ্রমে শুধু একটি ডাল সংগ্রহ বাড়ির আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে লাগিয়ে রাখলেই কিছু দিনের মধ্যেই গাছ বড় হয়ে যায়। দেখতেও সজনে গাছ খুবই দৃষ্টিনন্দন।
সজনে গাছের অতুলনীয় গুণ বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলার ১২টি ইউনিয়িন ও ১টি পৌরসভার সব অঞ্চলে শত শত সজনে ডাল রোপণ করে নিজ বসতবাড়িতে,কিন্তু দুখের বিষয় গত বছর ২০ মে উপকুল অঞ্চল সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা ্উপর দিয়ে যে প্রাকৃতিক আম্পান ঝড় তান্ডাব চালিয়ে গেছে,তাতে সজনে গাছ অনেকটা নষ্ট হয়েছে।তারপরে ও আল্লাহর রহমতে গাছে যে পরিমান মুকুল ধরেছে।যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ্য না হয়,তাহলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশে বিভিন্ন বিক্রয় করা যাবে। উপজেলার দেয়াড়া ঘোষ পড়ার ৭০% বাড়িতে সজনে চাষ করে।। বাকী যে পরিবারগুলোতে সজনে গাছ নেই, এ বছর সে পরিবারগুলো ১০০% সজনে গাছ লাগানোর জন্য এলাকার কৃষক, যুবক ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে গ্রামের মানুষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে।প্রত্যেককে নিজেদের বাড়িতে সজনে গাছ আছে তার বাড়ি ২টি ডাল সংগ্রহ করে যাদের বাড়িতে নেই সেখানে রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কৃষিবিদ বলেন, সজনে ডাটা ঔষধে গুনে ভরা একটি সবজি তাই তিনি বলেন সজনে ডাল লাগানো কার্যক্রমকে বাস্তবায়সন করতে এলাকার তরুন, যুবক ও কৃষকদের সাথে সজনে গাছ এর গুণাগুণ ও সজনে খাওয়ার গুরুত্¦ বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাড়ি বাড়ি সজনে গাছ রোপণ করতে গিয়ে কৃষকদের সাথে তৈরি হয়েছে গভীর সম্পর্ক, একে অপরের সাথে কৃষি বিষয়ে তথ্য আদান প্রদান বীজ সংরক্ষণ, জৈবসার তৈরি ও ব্যবহার বিষয়ে জানাজানি হয়েছে। এই সব গ্রামের কৃষক সোহরব আলী (৫৫) বলেন, “আমার বাড়িতে সজনে গাছ ছিলো না, আমার পাশের পাড়া থেকে একটা সজনে ডাল চাইলে তারা আমাকে ৩টা ডাল দিয়ে সহযোগিতা করেন। ”সজনে সম্পর্কে একটা প্রবাদ আছে, “সজনে বা সজনেপাতা ৩০০ রকম রোগ প্রতিরোধ করে”। আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, এই ছোট্ট পাতা অবিশ্বাস্য মাত্রায় পুষ্টিকর, যা আমাদের শরীরকে মজবুত করতে পারে।
যে কোন খাবারের সাথে বা তরকারীর সাথে তাজা বা শুকনা সজনে পাতা মিশিয়ে খাওয়া যায় । পাতা শুকিয়ে রাখা যায়। প্রতিদিন ৬-৭ টি পাতা খেলে স্বাস্থ্যর উন্নতি হয়। সজনে ছাল, পাতা, ডাটা ফুল ও বীজ পুষ্টি ও ঔষুধি হিসেবে কাজ করে। তাই এক কথায় বলায় যায়, সজনে হলো পুষ্টি আধার।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]