সাতক্ষীরার কলারোয়ার কামারালী বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব (৮০) ইন্তেকাল করেছেন।
বুধবার (২৬ জানুয়ারী) বিকেলে তার এক প্রাক্তন ছাত্রের জানাজায় যাওয়ার পথে স্ট্রোক করার পর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারী) সকাল ১১টায় কামারালি বহুমুখি মাধ্যামিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, তালা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বক্কর ছিদ্দিক, যশোর সরকারি এমএম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর আব্দুর রহমান, কয়লা হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক আমানুল্লাহ আমান, যুগিখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান, কামারালী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার, কামারালী মাদসার সুপার ওসমান গণি, সাংবাদিক সহকারী অধ্যাপক কেএম আনিছুর রহমান, প্রয়াতের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম বকুল, দিদার বাবু, জামাতা ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার, যশোর সরকারি এমএম কলেজের কয়েকজন অধ্যাপক, উপজেলার অধিকাংশ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকসহ অসংখ্য মুসল্লি জানাজায় অংশ নেন।
জানাজা নামাজ পরিচালনা করেন স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম মৌলুভী শহীদুল ইসলাম।
প্রয়াত আব্দুল ওহাব কামারালী গ্রামের মরহুম খোদা মোল্যার পুত্র।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ‘বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কামারালী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে তার প্রাক্তন ছাত্র কামারালী গ্রামের সানা পাড়ার মতিয়ার মোড়লের জানাযায় অংশ নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে পায়ে হেটে রওনা হন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব। মাদ্রাসা মাঠে পৌছানোর আগেই তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাৎক্ষনিক পার্শ্ববর্তী লোকজন তাকে মাদ্রাসার পাশে আব্দুল মজিদ খাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় তার অবস্থা খারাপ দেখা দিলে গ্রাম্য ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এ্যাম্বুলেন্স যোগে যশোর নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কলারোয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।’
উল্লেখ্য, প্রায় ৩৮ বছরের শিক্ষকতা জীবন পার করা প্রয়াত আব্দুল ওহাব অবসর নেয়ার পর দুই থেকে তিন প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। দীর্ঘ সময় অতিথি শিক্ষক ছিলেন কলারোয়া বিএড কলেজে। তাছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের একটি প্রকল্পে প্রশিক্ষক হিসেবে দেশব্যাপী প্রায় ছয় বছর চাকরি করেছেন। তিনি দীর্ঘ সময় যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রধান নিরীক্ষকও ছিলেন।
তার বড় মেয়ে হাসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে যুব উন্নয়নের একজন বড় কর্মকর্তা। বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বকুল ঢাকা কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের সহকারী বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। মেঝে ছেলে বাবু এমএ পাশের পর একজন বড় ব্যবসায়ী। ছোট মেয়ে শিউলি এমএ পাশ করার পর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন এবং ছোট ছেলে কনক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে যশোর সরকারি এম এম কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের কর্মরত আছেন।
সন্তানদের পক্ষ থেকে তার পিতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]