সাতক্ষীরা কলারোয়ার এক হতদরিদ্র বয়ঃবৃদ্ধ দম্পতি গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি দিয়ে ছাটায়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এরা হলেন পৌরসদরের ১নং ওয়ার্ডের তুলশীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা ও করিম দম্পতি। এই দম্পতির নেই কোন সংসারের উপার্জন ক্ষম ব্যক্তি।নেই কোন পুত্র সন্তান।আছে একটা বিবাহিত মেয়ে সন্তান।পায় কোন তেমন সরকারী সহয়তা।বয়েসের ভারে নুয়ে পড়েছে তাদের জীবন।বয়েসের ভরে পারে না কামলা দিতে । প্রতিবেশীর দেওয়া ঢেঁকি দিয়ে বিভিন্ন প্রকার শস্যদানা মাড়ায় বা ছাটাই করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে।এ বয়েসে তারা কারও জীবনের বোঝা না হয়ে নিজের বল শক্তি দিয়ে জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্র আবিষ্কার হওয়ার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকির পুরোনো ঐতিহ্য। এ কারনে তাদের তেমন আয় হয় না।এক সময় ঢেঁকি ছিল গ্রামীণ জনপদের চাল ও চালের গুঁড়া বা আটা তৈরীর একমাত্র যন্ত্র।
তারা জানান, অগ্রহায়ন পৌষ,মাঘ মাসে কৃষক ধান কাটার পর কৃষাণীদের ঘরে ধান থেকে চাল ও চালের গুঁড়া করার ধুম পরে যেত।চারিদিকে ঢেকির ধুপধাপ শব্দ পাওয়া যেত,চালের গুড়ার আটা দিয়ে পিঠা পুলি, ফিরনী, পায়েস তৈরি করে জামাই আদর করা হতো। এছাড়াও নবান্ন উৎসব বিয়ে, ঈদ, পূঁজায় ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে আটা তৈরী করা হতো। আটা তৈরি করতে ঢেঁকিতে কাজ করত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত।এখন সেগুলো হল শুধু স্মৃতি।
এক যুগ আগেও মানুষ ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে চিড়া, আটা তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করত।ঢেঁকির ধুপধাপ শব্দে মুখোরিত ছিল বাংলার জনপদ। কিন্তু এখন ঢেঁকির সেই শব্দ শোনা যায় না। বর্তমানে আধুনিকতার শোয়াই ঢেঁকির শব্দ নেই। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন জনপদের ঐতিহ্যবাহি কাঠের তৈরী ঢেঁকি। তারা আরো জানান জ্বালানীর তৈল বা বিদ্যুৎ চালিত মেশিন দিয়ে ধান ও চাল তৈরীর কারণে ঢেঁকি আজ কদরহীন। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে গ্রাম বাংলার ঢেঁকির ব্যবহার কমে গেছে। তবে, আমাদের কথা কেউ চিন্তা করে না। নতুন ধানের চাল দিয়ে ঢেঁকিতে চালের গুড়া করে আমাদের দেয় কেজি প্রতি ১০ করে দেয়, মেশিনে ছাটাই করলে কেজি প্রতি ২২টাকা।তার পরেই নেই কোন কাজ।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]