সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পানের বাম্পার ফলন সত্বেও পান চাষীদের মুখে হাসি নেই। পানির দামে পান বিক্রি আর বাজার মূল্য কম হওয়ায় পান চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। ভরা মৌসুমেও পানের দাম কম থাকায় পান চাষীরা রীতিমতো দূ:চিন্তায় পড়েছেন।
ফলে চলতি সময়ে পান চাষ করে লাভের পরিবর্তে ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে পান চাষীদের।- এমনটাই জানালেন তারা।
কয়েকজন পান-চাষী বলেন, পানের বাজারে ধ্বস নামার মূলকারণ নিত্যপণ্য দাম বৃদ্ধি পাওয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে পান ক্রয় ও খাওয়া বাদ দিয়েছেন।
উপজেলার বড় পানের বাজার খোরদো। সেখানে ঘুরে দেখা গেছে, কাক ডাকা ভোর থেকেই খোরদো, চাকলা, খাজুরা, হাজরাকাটী, মুরারিকাটী, জয়নগর, বরনডালী এলাকা থেকে খোরদো হাটে পান বিক্রেতারা অটোভ্যান, মিনি ট্রাক, অটোচার্জার ভ্যান, মোটরসাইকেল, এমনকি মাথায় করে তাদের বরজের উৎপাদিত পান নিয়ে বাজারে এসেছেন। বিক্রেতাদের পাশাপাশি কলারোয়ার বাইরের এলাকার ক্রেতারাও আছেন।
পান চাষীরা জানান, পূর্বে যে পানের পোন বিক্রি হতো ১শ’৫০ থেকে ১শ’ ৮০টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩ টাকা থেকে ৩৫/৪৫ টাকায়। আগে যে পান ৪০/৬০ টাকা বিক্রি হতো এখন সেই পান পোন প্রতি ৪/১০টাকা।
পান-চাষী উপজেলার জয়নগর গ্রামের দিলীপ কুমার ঘোষ ও সাইফুল ইসলাম জানান, পানের উৎপাদন বেশি, বিক্রয় কম। তবু এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে খুববেশি সময় লাগতো না, যদি পূর্বের মত পানের দাম থাকতো। পানের বাজারের যে অবস্থা এতে ঋণের টাকা পরিশোধ দুরের কথা- এখন সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।
আরেক পান চাষী দেবাশীষ জানান, বরজে কাজ করা দিনমজুরের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় বর্তমান যে পানের দাম তাতে পান বিক্রি করে মজুরির টাকা পরিশোধ করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পানচাষীরা পানচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে বলে তাদের শংকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, পান চাষ একটি লাভজনক ফসল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সাময়িক এমনটা ঘটছে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই পানের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
তবে উপজেলায় মোট কত হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়েছে এবং কতজন পানচাষী রয়েছেন সেই বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক কোন তথ্য দিতে পারেননি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]