কলারোয়ার সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের মহিলা মেম্বর প্রার্থী রহিমা খাতুন ও তার ছেলে মাসুদ রানার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার খাসপুর মোড় সংলগ্ন রাস্তায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রথমে তাদের সোনাবাড়ীয়া নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে নেওয়া হয় কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে, অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যার পরপরই রহিমা খাতুনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রহিমা খাতুন অচেতন অবস্থায় থাকায় ঘটনার বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে মাসুদ রানার জ্ঞান ফিরলে তখন তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে কলারোয়া থেকে বাড়ি (সোনাবাড়ীয়া) ফিরছিলাম। পথে খাসপুরের মোড় পার হয়ে সামান্য একটু সামনে এলে মুখ বাঁধা একটা ছেলে আমাদের গতিরোধ করে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ৭/৮জন যুবক চলে এসে আমাদের এলােপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমার মা মাটিতে পড়ে গেলে তাকে লাথি, কিল ঘুষি মেরে প্রচন্ড রকম ভাবে পেটে আঘাত করতে থাকে। দুপুরের ফাঁকা রাস্তায় দেড়/দুই মিনিটের মধ্যে তারা এই তাণ্ডব চালায়। একটা মাহিন্দ্রা আসতে দেখে তারা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। সবার মুখ বাঁধা থাকায় সেসময় আমি কাউকে চিনতে পারিনি।
রহিমা খাতুনের স্বামী ওসমান গণমাধ্যমে বলেন, আমার স্ত্রী এখন মৃত্যুর সাথে লড়ছে। আমার ছেলের অবস্থাও খুব খারাপ। নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক প্রতীকের প্রার্থী ডলি আক্তারের ইন্ধনে তার লোকজন এই হামলা চালিয়ে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সোনাবাড়ীয়া নাসিং হোমে অবস্থানকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মহিলা বলেন, সে (রহিমা খাতুন) পেটে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন। তার এখন খুব ব্লিডিং হচ্ছে।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও) ডা. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মেম্বর প্রার্থী রহিমা খাতুনকে আমরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তবে, তার ব্লিডিং এখনো বন্ধ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যার দিকে রহিমা খাতুনের ছেলের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত বলেও জানান তিনি।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, এঘটনার প্রতিবাদে ও দুই প্রার্থী একই ভোট পাওয়ায় পুননির্বাচনের দাবিতে সোনাবাড়ীয়ায় মানববন্ধন করেছে কয়েক'শ নারী-পুরুষ। মানববন্ধনে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। সবাই এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং অতিদ্রুত একটি পুননির্বাচনের জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন থেকে রহিমা খাতুনের মেয়ে রাবিয়া গণমাধ্যমে বলেন, প্রতিপক্ষ মাইক প্রতীকের প্রার্থী দৌঁড় ঝাঁপ করে ভোটের ফল তার দিকে নেওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু ভোটের ফল একই হওয়ায় আমরা পুননির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি বারবার। এরইমধ্যে আজ দুপুরে আমার মা ও ভাইয়ের উপর নির্মম হামলার ঘটনা ঘটলো। ডলি আক্তারের ইন্ধনে এই হামলা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে জিরাফ প্রতীক নির্বাচন করেন মোছাঃ রহিমা খাতুন। নির্বাচনে তিনি সর্বমোট ১৩২২ ভোট পান। এদিকে মাইক প্রতীকের প্রার্থী ডলি আক্তারও নির্বাচনে ১৩২২ ভোট পান। উভয়েই সমান ভোট পাওয়ায় এই সংরক্ষিত আসনে পুননির্বাচনের দাবি জানান রহিমা খাতুন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]