কলারোয়ায় সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব ‘জামাই ষষ্ঠী’ উদযাপন করা হয়েছে। মেয়ের স্বামীকে নানান পদের খাদ্যখাবার, আদর আপ্যায়নসহ নানান আয়োজন করা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বী যাদের মেয়ের বিয়ে হয়েছে সেসকল প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এই উৎসব চলে।
জানা গেছে, জামাই ষষ্ঠীর সমস্ত আয়োজন মূলত বাড়ির জামাইকে ঘিরে। জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এ লৌকিক আচারটি পালন করা হয় বলেই এর নাম জামাই ষষ্ঠী।
সুকুমার বিশ্বাস নামে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি জানান, ‘এদিন জামাইকে আনুষ্ঠানিক দাওয়াত করে শশুর বাড়িতে আনা হয়। শশুর বাড়ির লোকজন তাদের জামাইকে বিভিন্ন রকমের খাদ্য খাবার পরিবেশনসহ নানান আয়োজনে ‘জামাই ষষ্ঠী’ উদযাপন করে থাকে।’
তিনি আরো জানান, ‘জামাই ষষ্টি উপলক্ষে কলারোয়ার প্রায় সকল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আজ মেয়ে জামাইয়ের দেখা মিলছে। এদিন ধর্মীয় রীতিতে বিভিন্ন কর্মকান্ড থাকলেও মূল আকর্ষণ থাকে খাদ্যখাবারের দিকেই। জামাই ষষ্টী পর্বটি জামাইদের জন্য খুবই লোভনীয়। কারণ ভুড়িভোজ, সাত রকমের ভাজা, শুপ্তো, মুগের ডালের মুড়িঘন্টো, বিভিন্ন মাছের বাহারি রকমের পদ, পাঁঠার মাংসের ঝোল, চাটনি, দই-মিষ্টি, আম কাঁঠালসহ যে পরিবার যেমন পারে তেমন খাবারের আয়োজন করে থাকে।’
জানা গেছে, জামাই ষষ্টী পার্বনটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হলেও এর প্রভাব প্রাচীনকাল থেকে বাঙালি জীবনেও দেদীপ্যমান ও উৎসবমূখর।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, ‘বিবিধ প্রকার ফলজ, বনজ ও ওষুধী গাছের ডাল একত্র করে অনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় স্নান দিয়ে পূজা করা হয়। প্রথমে জামাইরা, তারপরে বাচ্চারা এবং সবশেষে বাড়ির বাকি সদস্যরা ষষ্টীর জল নেন। দূর্বা ঘাস জলে ডুবিয়ে শরীরে ছোঁয়ানো হয়। তারপর জলে ডোবানো পাখার বাতাস করতে করতে ‘ষাট ষাট, বালাই ষাট’ মন্ত্র আওড়ানো, সবশেষে দূর্বা পুঁটুলির চাল আর গামলাতে ডোবানো ফল হাতে দিয়ে প্রাথমিক ষষ্ঠীর ইতি টানা হয়। পরবর্তীতে শ্বাশুড়ি মেয়ে জামাইকে নিয়ে মন্দিরে যান তাদের ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনার্থে। শ্বাশুড়ি বা শশুর বাড়ির লোকজন হরেক রকম খাদ্যখাবারের বন্দোবস্ত করেন। নিজেরা কিন্তু উপোস থাকেন, কেউ কেউ আবার নিরামিশ খান।’
সনাতন ধর্মাবলম্বী মতে, ‘এই পার্বণ মূলত পরিবেশ রক্ষার্থে গাছ কে দেবতা বিশ্বাসে পূজা করা। কেননা এ আয়োজনে বিবিধ গাছের ডাল যেমন দরকার হয় তেমনি এ দিনে সনাতন পরিবারে থাকে বাহারি মৌসুমি ফল। কিন্তু এখন সময়ের পরিক্রমায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এ পার্বনের মূল উদ্দেশ্য।’
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]