সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্ট্রি অপারেটর ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী মো.কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ দিয়ে হয়রানি, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন, পেশাগত ক্ষেত্রে অপরিসীম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষার রেজাল্ট জালিয়াতি করার অভিযোগে রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্ট্রি অপারেটর কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এড. রুহুল আমিন বাদি হয়ে গত ১৩ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিক্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মো. রোকনুজ্জামান ত ও শৃ-শিক্ষা অফিসার এর স্বাক্ষরিত, ৩৮.০১.০০০০.৩০০.২৭.২৩৭.২১-২৬৩(৯) স্মারক নং এক পত্রে ২৯ ও ৩০ আগস্ট ২০২১ তারিখে কলারোয়া উপজেলার রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্ট্রি অপারেটর কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) অফিসে দু’দিন ব্যাপী তদন্ত হবে। উক্ত তদন্তনুষ্ঠানে স্বাক্ষ্যপ্রমানসহ বাদি ও বিবাদী এবং সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বলে বাদি এড. রুহুল আমিন নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ১৪ জানুয়ারী ২০১৬ সালের দিকে প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষার রেজাল্ট ডি.আর এন্ট্রি ও প্রাথমিক পরিক্ষার রেজাল্ট এর টেবুলেশনশীট এন্ট্রির দায়িত্ব পালনের সময় কালীন বিভিন্ন অভিভাবকদের নিকট থেকে অর্থের বিনিময়ে রেজাল্ট জালিয়াতি করেছে। সেই সময় জনসম্মুখে উন্নোচিত হয় এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৬২ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অভিভাবক ব্যক্তিগণ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ে করেন। অভিযোগের ভিক্তিতে ২৭ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ওহিদুল আলম বিষয়টি নিয়ে তদন্ত প্রস্তুতি নিলে সেই সময় কামরুজ্জামান স্থানীয় রাজনীতিবিদ ব্যক্তিবর্গের প্রভাবখাটিয়ে তদন্ত কার্যক্রমটি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কামরুজ্জামান এসব দুনীতি আড়াল করতে ও ভিন্ন খ্যাতে নিয়ে যেতে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ব্যক্তিবর্গের প্রভাবখাটিয়ে সরকারী ইউআরসি কর্মকর্তা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অভিভাবক ব্যক্তিগণদের নামে কামরুজ্জামান বাদি হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো জানাযায়, সাংবাদিক সেলিম হোসেনকে একটি ই-মেইল আসার অবহিত করেন কামরুজ্জামান। গত ২৩/৯/২০১৭ তারিখে রাত ১২.৩৪ মিনিটে (এডিভি রাহুল) নামে একটি ই-মেইল থেকে সাংবাদিক সেলিম হোসেনের ই-মেইল ঠিকানায় একটি বার্তা কপি ও কম্পোজ লেখা আসে। ই-মেইল আসার বিষয়টি কামরুজ্জামানকে অবহিত করলে উক্ত ই-মেইলে বার্তা কপি ও কম্পোজ লেখাটি কামরুজ্জামান ডাউনলোড করে নিয়ে সাংবাদিক সেলিম হোসেনকে না জানিয়ে ও যাচাইবাচাই না করে ১৯ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সম্পাদক বরাবর ইউআরসি, ডাটাএন্ট্রি অপারেটর পরিচয় গোপন রেখে কামরুজ্জামান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এড. রুহুল আমিনের নামে মিথ্যা লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়াও এড. রুহুল আমিনের নামে ফেসবুক ভুয়া আইডি খুলে ও তার ছবি ব্যবহার করে জেলা অফিস, সদর ইউআরসিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ্যাডমিন করায় শিক্ষক মোস্তফা কামাল, পিটিআইও গেীরঙ্গ গাইন, এ.ইউ.ই.ও মফিজুল ইসলাম, ডাটাএন্ট্রি অপারেটর কৃঞ্ষ রায়, সদর ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর ইমান উদ্দীন, বাজুয়াডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোপাল, পরান্দহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শফিউল আলম শাহীন, তরুন কান্তি সানা, শাহারুল ইসলাম শান্ত, পিটিআই ইন্সট্রাক্টর দেবাশীষ বসু, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর জয়দেব কুমার বিশ্বাস, বিদ্যুৎ টেলিকম ই-মেইল ঠিকানা ও পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট মহাদেব ব্যানার্জি সহ আরো অনেকের শিক্ষক ও সরকারী কর্মকর্তাদের নিকট ওই আইডি থেকে ম্যাসেজ ও রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে এড. রুহুল আমিনকে সহ এসব জনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ করেন।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্টি অপারেটর কামরুজ্জামানের নিজের স্ত্রীর নামে অনলাইন পত্রিকার কার্ড বানিয়ে কামরুজ্জামান তার অফিস করার শেষে কামরুজ্জামান কখনো সাংবাদিক পরিচয়, আবার কখনো এক সাংবাদিকের সহকর্মী পরিচয় দিয়ে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য জেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারী, বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সরকারী গুরুত্বপূর্ন গুপ্তচর তথ্য সংগ্রহ নেওয়া ও ছবি তোলার কাজে সে স্বশরীরে লিপ্ত থাকতে এবং প্রায় সময় এক সাংবাদিকের সাথে ঘুরতে দেখাযায়। কামরুজ্জামান একজন সরকারী লোক হয়ে তার স্ত্রীর নামে অনলাইন কার্ডের জোরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর নামে ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে অথবা সরাসরি ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশ করেছে। আরো জানাযায়, সদর উপজেলার ৩৯ নং কাশেমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি বিভিন্ন স্থানে গর্ত পরিণত হয়। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও যুবকরা ওই মাঠে খেলা করতে পারে না। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অনুমতি নিয়ে ওই খেলার মাঠটি সমান করার জন্য স্থানীয়রা লাঙ্গল দিয়ে মাঠটি চষে দেয়। একপর্যায় রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্টি অপারেটর কামরুজ্জামান ১২ আগস্ট ২০২১ তারিখে মোটরসাইকেল যোগে ওই খেলার মাঠে স্বশরীরে গিয়ে ছবি তুলতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন। এসময় স্থানীয়রা রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্টি অপারেটর কামরুজ্জামানকে ছবি তুলতে দেখতে পান। কামরুজ্জামানের সহযোগিতায় ওই স্থানীয়দের নাম ও বিদ্যালয়ের দপ্তরীকে হয়রানি ও বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও কামরুজ্জামানের সহযোগিতায় জেলার বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের নামে অপপ্রচার ও সংগঠনের নামের সাইন বোর্ডের ভিডিও ছবি ধারণ করে তার স্ত্রীর ফেসবুক আইডি ম্যাসেঞ্জার থেকে বিভিন্ন নামের ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিয়ে আদিপত্ত বিস্তর ঘটিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য ১৯৭৯ সালের বিধিমালার ২২ নম্বর বিধির ব্যত্যায় ঘটিয়ে কোনো সরকারী কর্মচারীরা বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদন ছাড়াকিংবা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ছাড়া বেতার, টেলিভিশন সম্প্রচাওে অংশগ্রহন করতে অথবা কোনো সংবাদপত্র বা সাময়িকীতে নিজ নামে অথবা বে-নামে অথবা অন্যের নামে কােনো নিবন্ধ বা পত্র লিখতে পারবে না। কিন্তু রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্টি অপারেটর কামরুজ্জামান আইন কানুন না মেনে তার নিজের জেলায় চাকুরী করার সুবাদে স্থানীয় রাজনীতিবীদ ব্যক্তিবর্গ প্রভাবখাটিয়ে ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারী লোকজন, সাংবাদিক, শিক্ষকদের নামে নিজের স্বাক্ষরিত লিখিত মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও হয়রানি করাসহ আদিপত্ত বিস্তার করে শান্তি শৃংখলা বিনষ্ট করে আসছে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ কাছে রিসোর্স সেন্টারের ডাটাএন্টি অপারেটর কামরুজ্জামানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]