সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় এখন করোনা ঝুকিতে ডুবছে জনসাধারণ। এই উপজেলাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানটাই করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি বেশি দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন প্রতিনিয়তই করোনায় আসক্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে সতর্কীকরণ প্রচার-প্রচারণা। প্রনয়ণ করা হচ্ছে স্বাস্থ্য বিধি এবং গ্রহণ করা হচ্ছে কঠোর লকডাউন কর্মসূচি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।
সাধারণ রুগী এবং করোনা আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা অনুযায়ী কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে শয্যা সংখ্যা খুবই সীমিত। সাধারণ রুগীর পাশাপাশি জরুরী ভাবে করোনা রুগীর চিকিৎসা দেওয়া বড়ই কঠিন কাজ। আর তা ছাড়া করোনা চিকিৎসায় যতগুলো চিকিৎসা পদ্ধতি থাকার প্রয়োজন, তা এখানে নাই। ফলে ঝুকিপূর্ণ রুগীদেরকে পাঠানো হচ্ছে ২০থেকে ২৫কিঃ মিঃ দুরে সাতক্ষীরা জেলা সদর হাসপাতালে। এভাবে অত্র জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার রুগীর চাপ গিয়ে পড়ছে জেলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সরকারি হাসপাতালে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০শয্যার করোনা ইউনিট রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে আট শয্যার আইসিইউ ও আট শয্যার এইচডিইউ। এ ছাড়াও রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলা। একইভাবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রয়েছে ৪০ শয্যার করোনা ইউনিট। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালুর কাজ চলছে। ২৮টি বড় ও ৭৪টি ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে হাসপাতালটিতে। তবে সেখানে নেই কোনো হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলা, নেই ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা। এমতাবস্থায়,করোনা রুগীর সুষ্ঠ চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটুকু দেওয়া সম্ভব তা সহজেই অনুমেয়। তবে,করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে,যা থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে করোনার পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়। কিন্তু তাতে কি রুগীর সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে? কলারোয়া একটি ব্যাবসা বান্ধব উপজেলা, এ উপজেলার থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ হলেও জরুরী বিভাগ গুলোয় বিশেষ করে করোনা চিকাৎসায় কাঙ্খিত ফলাফল মেলে না, বাধ্য হয়েই রুগীদেরকে সাতক্ষীরা সদরে যেতে হয়। এছাড়া ১২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলিতেও পর্যাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার না থাকায় এবং অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরে এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলারোয়া উপজেলা সুশীল সমাজ। কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য করোনা ইউনিট চালু করা জরুরী প্রয়োজন, অর্থাৎ জেলা সদরের ন্যায় শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে কলারোয়া উপজেলাতেও একটি মাণ সম্পন্ন করোনা ইউনিট চালুর একান্ত প্রয়োজন, তাতে করে জেলা সদর এর উপর চাপটা অনেকাংশে কমবে বলে এই চিকিৎসক জানান। কলারোয়া উপজেলার চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু একান্ত সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর যাবত কলারোয়া সরকারি হাসপাতালটি ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বরং হাসপাতালটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি কলারোয়া উপজেলার জনসাধারণের দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে করোনার এই সংকট মুহূর্তে করোনা ইউনিট চালু সহ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে জন দূর্ভোগ রোধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহনে সরকরের প্রতি জোর দাবী জানান।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]