আসন্ন ৩০ জানুয়ারী কলারোয়া পৌরসভার ৩য় নির্বাচন। ২০১১ সালের প্রথম, ২০১৬ সালে ২য় এবং এবারের ৩য় নির্বাচনকে সামনে রেখে কলারোয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৭টি গ্রামে বয়ে চলছে নির্বাচনী হাওয়া। সর্বত্র মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে তাদের জনপ্রিয়তা জানান দিচ্ছেন, চাচ্ছেন ভোট ও দোয়া, দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
মেয়র পদে ৫জন প্রার্থী কাগজেকলমে থাকলেও মূলত ভোটের মাঠে ৪জনের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পৌরসভার প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র গাজী মো. আক্তারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহর হামলা মামলার আসামি হওয়ার কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াবেন বলে জানা গেছে। তিনি এখন পর্যন্ত নিজের প্রতীকের জন্য কোন প্রচারণা না চালিয়ে আরেক প্রার্থী তার সহধর্মিণী নার্গিস সুলতানার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনী মাঠে কার্যত চারজন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে লড়ছেন, চালাচ্ছেন প্রচারণা। বাকি তিন প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও সাবেক কলারোয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল, বিএনপি মনোনীত শরীফুজ্জামান তুহিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু।
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রার্থীরা নেতাকর্মী নিয়ে রাত দিন সকল ওয়ার্ডে নিজেদের প্রতীক বিজয় করার জন্য চষে বেড়াচ্ছেন। পৌর সভার ৯টি ওয়ার্ড এর অলিতে-গলিতে পোস্টার, ব্যানার শোভা পাচ্ছে। মাইকিং সহ বাড়ি যেয়ে ভোটারদের নিকট ভোট প্রার্থনা করছেন। বিজয় হলে কলারোয়া পৌরসভাকে একটি মডেল পৌর সভায় রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
আলাপচারিতায় নিজের জয়ের বিষয় জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ‘জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার মাঝি বানিয়েছেন। আমি চারদিকে যে পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি তাতে আমার বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আমাকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছেন। যদি মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তবে আমি বিজয়ী হবো বলে আশাবাদী।’
মোবাইল ফোন প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু বলেন, ‘বিজয়ী হলে অবহেলিত কলারোয়া পৌরসভাকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করবো।’
আরেক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জগ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন দুই বারের নির্বাচিত সাবেক মেয়র গাজী মো. আক্তারুল ইসলামের সহধর্মিণী নার্গিস সুলতানা।
মূলত আক্তারুল ইসলামই তার স্ত্রীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
নার্গিস সুলতানা বলেন, ‘আমার স্বামী অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি একটি মামলার আসামি হওয়ায় হয়তো যেকোন সময় তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে। এছাড়া কিন্তু তাকে দলীয় নমিশেনও দেওয়া হয়নি। তার প্রতি অবিচার ও অন্যায় করা হয়েছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে সকলের দাবির মুখে আমি প্রার্থী হয়েছি। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো বলে আশাবাদী। আমি জয়ী হলে কলারোয়া পৌরসভার নিপীড়িত ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বিজয় হবে।’
আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দুই বার মেয়র নির্বাচিত হই। তবে আমাকে বারবার বরখাস্ত করে রাখা হয়। এছাড়া গতবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও এবার মনোনয়ন পাইনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি ও আমার সহধর্মিণী নার্গিস সুলতানা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও আমি ভোট করছি না। আমার স্ত্রীর জগ প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন চালিয়ে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী সঠিক ভাবে ভোট হলে জগ প্রতীক বিজয়ী হবে। আমাকে যেটা করতে দেয়া হয়নি সেটা নার্গিস সুলতানার মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহি, দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ পৌরসভা বাস্তবায়ন করা হবে। জনগণ ও পৌরসভার ভাগ্গোন্নয়নে আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে।’
এদিকে, কার্যত ৪জন মেয়র প্রার্থী সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আগামি ৩০ জানুয়ারী ভোটের ফলাফলই বলে দিবে কে হচ্ছে পরবর্তী কলারোয়ার পৌর পিতা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]