কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: আগামী ৮ই মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহন কর্মকর্তা নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে। ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরাও পেয়েছে পোলিং অফিসারের প্রশিক্ষণ।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ৯ থেকে ১১ পর্যন্ত প্রভাষক ও শিক্ষকদের প্রিজাইডিং বা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এছাড়া বেতন গ্রেড ১২ থেকে ১৬ পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পোলিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তবে আগামী ৮ই মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে নির্বাচনী দ্বায়িত্ব পালনের জন্য হাইস্কুল-কলেজের ৯ গ্রেড থেকে ১১ গ্রেড পর্যন্ত প্রভাষক এবং শিক্ষকরা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে প্রশিক্ষণের জন্য প্যানেলভুক্ত হলেও একই গ্রেডে থাকা মাদ্রাসার প্রভাষক ও শিক্ষকদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পোলিং অফিসার হিসাবে। যার ফলে মাদ্রাসার এমপিও ভুক্ত প্রভাষক ও শিক্ষকরা চরম বৈষম্য ও স্বেচ্ছাচারীতার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এ নিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার সকল মাদ্রাসার প্রভাষক ও শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষুব্ধ হয়ে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক শহিদুল্যাহ বলেন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়ার নামে তাদের সম্মান হানি করা হয়। একই গ্রেডে চাকুরী করে কলেজ এবং হাইস্কুলের শিক্ষকদের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও মাদ্রাসার উচ্চতর গ্রেডের শিক্ষকদেরকে পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এমন কি কোন কোন মাদ্রাসা থেকে ১/২ জন শিক্ষক কর্মচারীকে নির্বাচনী কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় আবার কোন কোন মাদ্রাসা থেকে মোটেই নিয়োগ দেওয়া হয়না।
পোলিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ পাওয়া কালিগঞ্জ কেন্দ্রীয় মাদ্রাসার শিক্ষক মো: হোসেন আলী সহ শিক্ষক ফরিদ উদ্দীন আল মাসউস, প্রভাষক হোসেন আলী, প্রভাষক আরিফ বিল্লাহ, সহকারী মৌলভী আনায়ারুল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সেচ্চাচারীতায় মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীরা চরম বৈষম্যর মাধ্যমে নির্বাচনী দ্বায়িত্ব পালনের জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছি। তারা আরও বলেন প্রশিক্ষণ পেলেও বিগত নির্বাচনের মতো হতে পারে, শেষ পর্যন্ত হয়তো আমাদের নিয়োগ দেওয়া হবে না। তাছাড়াও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৭ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা না থাকলেও তাদেরকে পোলিং অফিসার হিসেবে প্যানেলভুক্ত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুজ গাইন বলেন, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী পোলিং অফিসার হিসেবে প্যানেলভুক্ত হওয়ার কথা নয় যদি কোন কারণে হয়ে থাকে তবে চূড়ান্ত নিয়োগে অবশ্যিই তাদেরকে বাদ দেওয়া হবে। একই গ্রেডের হাইস্কুল কলেজের শিক্ষকদের প্রিজাইডিং বা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের পোলিং অফিসার হিসেবে প্যানেল ভুক্তির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন উপজেলা জুড়ে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের যে চাহিদা তার থেকে আবেদনকারী শিক্ষকদের সংখ্যা অনেক বেশি, যে কারণে উচ্চতর গ্রেডের অনেক শিক্ষকদের পোলিং অফিসার হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনে অনাপত্তি ও আবেদনের প্রেক্ষিতে এটা করা হয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: আতিকুল ইসলাম এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। তবে বিধি বর্হিভূত কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যিই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]