সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসের সন্ত্রাসী হামলা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে।
ঘটনার খবর জানতে পেরে রাত ১২টার সময় থানার উপ পরিদর্শক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে গেলেও কোন সন্ত্রাসীকে সেখানে পায়নি বলে সাংবাদিকদের জানান। উক্ত ঘটনায় কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলী বাদী হয়ে গত বুধবার দুপুরে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় ১টি এজাহার দায়ের করেছে।
বুধবার সকাল ৯ টার সময় সরে জমিনে ঘটনা স্থলে গেলে কালিকাপুর গ্রামের রাজগুল, মুস্তাফিজুর রহমান, সেলিম, বাবলু, আরশাদ মোস্তফা, মুকুল সহ একাধিক ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের জানায়, কালিকাপুর খেয়া ঘাটের পাশে বিগত ১০ বছর যাবত কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় টি অবস্থিত। হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাফিয়া পারভীনের হুকুমে তার বোন সামিয়া পারভীন, ইউপি সদস্য জোবেদ আলী নেতৃত্বে রফিকুল, আমিনুর, শাহীন, রেজাউল বিশ্বাস রুহুল কুদ্দুস, আব্দুল হামিদ, সাইফুল, সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল, আতাউর, নজরুল সহ ২০/২৫ টি মোটরসাইকেল যোগে প্রায় ৫০ /৬০ জন সন্ত্রাসী হাতে রামদা, লোহার রড ও বাসের লাঠি নিয়ে ওয়ার্ড কার্যালয় এ হামলা চালায়।
এ সময় তারা বাইরের দলীয় সাইনবোর্ড তুলে ফেলে দিয়ে দরজার তালা ভেঙে অফিসের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে রক্ষিত টেবিল-চেয়ার বেঞ্চ ভাঙচুর সহ দেয়ালে টানানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি টেনে ছিড়ে পদদলিত করে। ওই সময় তাদের সন্ত্রাসী তান্ডবে আশেপাশের ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং বসবাসকারীরা ভয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারা লুটপাট শেষ করে বাহিরে এসে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টানিয়ে উল্লাস করতে করতে চলে যায়। খবর জানতে পেরে সকাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার বাবা প্রয়াত চেয়ারম্যানকে মোশারফ হোসেনের আমল থেকে এই অফিসটি ব্যবহার করে আসছিল। তার ধারাবাহিকতায় সেও এই কার্যালয়টি তার অফিস বলে ব্যবহার করে আসছে তবে সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর ও বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরির ঘটনা অস্বীকার করেন। সশস্ত্র মোটরসাইকেল বহরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তার নিকট থেকে কোনো সদুত্তর মেলেনি।
এ বিষয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা কবিরুজ্জামান মন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলীর নিকট জানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, গতকাল সন্ধ্যার পরে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর ৫০/ ৬০জনের পেটুয়া বাহিনী মোটরসাইকেল যোগে যেয়ে অফিস ভাঙচুর লুটপাট সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর ও পদদলিত করে নিজের সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়ে এসেছে বিষয়টি আমরা সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সাহেব এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নরিম আলী মুন্সী এবং সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট কে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঘটনার আরও সত্যতা জানার জন্য থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোটর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান বিষয়টি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ডা: আ ফ,ম রুহুল হক সাহেবকে এবং সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার কে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ পেয়েছি দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত-পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]