কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশ পুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার নন্দলাল সরকারের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি সহ নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগসহ রবিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার সময় কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী সাদিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
লিখিত অভিযোগ এবং সংবাদ সম্মেলনের তথ্য মতে উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের মৃত গৌরচন্দ্র সরকারের পুত্র নন্দলাল সরকার বসন্তপুর ভূমি অফিসের তহশিলদার হিসাবে যোগদান করার পর হতে এলাকার মানুষ ঘুষ দুর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ভূমি মালিকদের জিম্মি করে জমির খাজনা কাটতে গেলে স্টেটমেন্ট এর ভয় দেখিয়ে ২০/৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ২/৫ শ টাকার খাজনা রশিদ দিয়ে বিদায় করে দেয়। নামজারির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬০০০ টাকা ক্ষেত্র বিশেষ ফাঁদে ফেলে ত্রুটির ভয় দেখিয়ে ২০/৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও অত্র ভূমি অফিসের অধীনে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন নাজিমগঞ্জ বাজারে পেরি পেরিভুক্ত সরকারী খাস জায়গা ইজারা এবং ইমারত নির্মাণের নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকারি জায়গায় পাকাইমারাত দোকান তৈরি করতে তাকে টাকা দিলে রাতারাতি ইমারত নির্মাণ শেষ হয়। আর যদি টাকা দিতে না পারে ওই ভুক্তভোগী ব্যক্তি ইজারার নামে বছরের পর বছর তহশীল অফিসে ধরনা ধরতে হয়।
আর এই সমস্ত টাকা উপজেলা ভূমিকর্মকর্তা, বড়বাবু, সার্ভেয়ার কে ঘুষ দেওয়ার নামে আদায় করা হয়। এছাড়াও বিজ্ঞ আদালত থেকে বিভিন্ন মামলার তদন্তের জন্য ন্যস্ত হলে ওই সমস্ত ভুক্তভোগী মালিকদের নিকট হতে তদন্ত রিপোর্ট পক্ষে দেওয়ার নাম করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সংলগ্ন রাস্তা ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপি জামায়েত সরকারের এমপির দেওয়া কাবিখার ৪০ টন চাউল এর টাকা দিয়ে ৪টি ক্লাবের ভিট করা হয়। ওই সময় বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখা লেখি হলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
উক্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় সনকা গ্রামের সাদিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি কিছু ইট খোয়া রেখে দেয়। উক্ত জায়গায় সনকা গ্রামের তালিকাভুক্ত যুদ্ধাপরাধী মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র বিএনপি নেতা শেখ লুৎফর রহমান নিজের দাবি করে গত ২৩ জুন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় পিটিশন ১২২১ নং একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি তদন্তের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি তদন্তের জন্য তহশিলদার নন্দদুলাল কে নির্দেশ দেন।
নন্দদুলাল সরে জমিনে এসে তদন্ত করে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে একটি অসত্য রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে পেশ করেন। এইভাবে মানুষকে তদন্তের নামে ফাঁদে ফেলে ঘুষ আদায় করে থাকেন। তবে এ বিষয়ে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য তহশীলদের নন্দদুলাল সরকারের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি ঘুষ দুর্নীতির বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন আমি তদন্ত করে যেটা পেয়েছি সেটাই দিয়েছি।
তবে নামজারি এবং খাজনা কাটার বিষয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে কম টাকার রশিদ দেওয়া প্রসঙ্গে কোন সদুত্তর মেলেনি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]