কিংবদন্তী তিন শিল্পীর মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসীদের শোক
অল্প সময়ের ব্যবধানে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন উপমহাদেশের সঙ্গীতের তিন কিংবদন্তী লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও বাপ্পি লাহিড়ী। তাদের মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসী সুধীজন শোক, শ্রদ্ধা ও গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
অনেকদিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে সন্ধ্যা বলেছিলেন, তার ও লতার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা। ১৯৫০ সালে তৎকালীন বোম্বে পাড়ি দিয়েছিলেন সন্ধ্যা। ১৭টি হিন্দি সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেছিলেন। শচীন দেববর্মনের হাত ধরেই বম্বে এলেও প্রথম প্লে-ব্যাক করেন অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ ফিল্মে। এই ফিল্মে গান গাইতে গিয়ে সন্ধ্যার সঙ্গে পরিচয় হয় লতার। লতা ও সন্ধ্যা ডুয়েট গেয়েছিলেন ‘তু বোল পাপিহে বোল’। এই গানের সূত্রে সন্ধ্যা ও লতার বন্ধুত্বের সূত্রপাত। লতা জীবদ্দশায় ৩৬ ভাষায় ত্রিশ হাজারের উপরে গান গেয়েছিলেন।
তাদের মৃত্যুতে কানাডা প্রবাসী সুধীজন শোক, শ্রদ্ধা ও গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। এক শোক বার্তায় কানাডার ‘নতুনদেশ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন, বিনম্র শ্রদ্ধা এ সকল কিংবদন্তি শিল্পীদের জন্য। কোভিড-১৯ আমাদের অনেক গুণীজনকে কেড়ে নিয়েছে। একের পর এক গুণীজনের মৃত্যুর সংবাদ আমাদের শুনতে হচ্ছে। তাদের বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বিশিষ্ট রম্য লেখক বায়েজিদ গালিব বলেন, যাদের সংগীত শুনতে শুনতেই বড় হয়েছি, তাদের চলে যাওয়াকে মানতে কষ্ট হয়, তবুও পরপারে খুব কম সময়ে একসাথেই চলে গেলেন তারা। সংগীত জগতে তাদের অবদান সাগর সমান। তাদের গান বংশপরম্পরায় টিকে থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। তাদের চিরনিদ্রা শান্তির হোক।
বাংলাদেশ ক্যানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি মোহাম্মদ রশীদ রিপন বলেন, আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে। মানুষের মৃত্যু অবধারিত, তারপরও বুকে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। তাদের মৃত্যুতে আমি শোকাহত।
এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ বাতেন বলেন, সুরের ভুবনের এই তারকাদের চলে যাওয়ায় সংগীত জগতে শূন্যতার সৃষ্টি হলো। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রুপক দত্ত বিশ্ব বরেণ্য এই তিন কৃতী শিল্পীর চির বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশের পাশাপাশি তিনি বলেন, সৃষ্টিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে লালনের মাধ্যমেই তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন সম্ভব।
কলামিস্ট ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, কিংবদন্তি তিন সংগীত শিল্পী ছিলেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সম্রাজ্ঞী। সুরে আর রচনায় বাংলাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে তারা যে অবদান রেখেছেন, এটি যেমন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়, পাশাপাশি বাঙালির সামাজিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তাদের শৈল্পিক অনুপ্রেরণা ছিল আরও বেশি মহীয়ান।
তিনি বলেন, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এসো’ গানের মাধ্যমে তো আমাদের ইতিহাসেরই অংশ হয়ে আছেন। এই দুই গুণী শিল্পী প্রয়াত হলেও ভারত বর্ষের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক জাগরণের ইতিহাসে তারা অমর হয়ে থাকবেন।
কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সাবেক ছাত্রনেতা কিরণ বনিক শংকর বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীত তারকাদের প্রস্থান সুর জগতে বিনামেঘে বজ্রপাতের মতোই। তারা যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।
কানাডার আলবার্টার প্রথম অনলাইন পোর্টাল প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল বলেন, মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। আমাদের মানতেই হবে। কর্মের মাধ্যমে তারা আমাদের হৃদয়ে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)