প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না, সেটা জোর (ফোর্স) করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কমিশনের দায়িত্ব থাকবে সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে আহ্বান জানানো। সব দল নির্বাচনে অংশ না নিলে তা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। গণতন্ত্র বিকশিত হবে না।
সোমবার ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এর অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে ইসি সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে সিইসি বলেন, একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবাইকে চেষ্টা করতে হবে। ইসি যে সংলাপ করছে, তা অর্থহীন নয়। আজকের সংলাপে অংশ নেওয়া ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তাঁদের মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বলেন, আপনারা বিদগ্ধ জন। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আপনাদের পরামর্শ কাজে লাগবে। আমরা চাই, আস্থার সংকট থাকলে তা কাটিয়ে উঠে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। আপনাদের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী কর্মকৌশল ঠিক করব।
রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে ইসির ভূমিকা নিয়ে আজকের সংলাপে দুই ধরনের মত উঠে আসে।
কেউ কেউ বলেছেন, সব দলকে নির্বাচনে আনতে সচেষ্ট হতে হবে। আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আস্থার সংকট ইসির মূল চ্যালেঞ্জ।
তবে কেউ কেউ বলেছেন, কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটা সেই দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে ইসির কিছু করণীয় নেই।
ইসি বলছে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য পরামর্শ নিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে তারা সংলাপ করছে। সংলাপে আসা সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করে নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করবে ইসি। এরপর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করা হবে।
ইসির এ ধাপের সংলাপে ৩৯ জন সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সংলাপে উপস্থিত হয়েছেন ২৬ জন।
সংবাদ সংস্থা ও অনলাইন সংবাদপত্রের মধ্যে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজী খালিদী, জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক এবং বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ মাসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন সংলাপে।
টেলিভিশনগুলোর মধ্যে ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক ও সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, গ্লোবাল টিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, যমুনা টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, নিউজ ২৪-এর নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, স্পাইস টিভির এডিটোরিয়াল হেড তুষার আব্দুল্লাহ, চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান, এনটিভির বার্তা প্রধান জহিরুল আলম, বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ আব্দুল হাই সিদ্দিক, মাইটিভির হেড অব নিউজ শেখ নাজমুল হক সৈকত, সময় টিভির হেড অব নিউজ মুজতবা দানিশ, ইনডিপেনডেন্ট টিভির চিফ নিউজ এডিটর আশিস সৈকত, মাছরাঙ্গা টিভির হেড অব নিউজ রেজোয়ানুল হক রাজা, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, দেশ টিভির চিফ নিউজ এডিটর বোরহানুল হক সম্রাট সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও মোস্তফা ফিরোজও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে।
চার নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা এমিলি, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন সংলাপে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত ১৩ মার্চ প্রথম দফায় ৩০ শিক্ষাবিদকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাতে সাড়া দিয়ে ১৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দফার সংলাপে ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানালে সংলাপে অংশ নেন ১৯ জন। আর তৃতীয় দফা সংলাপে আমন্ত্রিত ৩৪ সাংবাদিকের মধ্যে ২৩ জন ইসির বৈঠকে অংশ নেন।
কেএম নুরুল হুদা কমিশন দায়িত্ব হস্তান্তর করলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]