সোহেল পারভেজ, কেশবপুর প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্কুলের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রাখা হয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। অন্যত্র ক্লাস নিচ্ছেন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। খেলার মাঠে বন্যার পানি থই থই করায় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে লেখাধুলা থেকেও। সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানির কারণে এ অবস্থার হয়েছে। সৃষ্টি উপজেলা প্রাথমিক মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৩২টি সরকারি পাথমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজ, ১১টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি মাদ্রাসা বন্যার প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া কেশবপুর পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নের ১০৪টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক স্কুলের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় ক্লাস নিতে হচ্ছে অন্যত্র। বন্যার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পারেনি। ও
সরজমিন দেখা গেছে, হদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা, বিদ্যালয়ের অফিস রুম, ক্লাসরুম ও মাঠে হাটু সমান পানি। বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকগণ উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বিদ্যালয়ের অফিস ক্লাস রুম মাঠ ও যাতায়াতের রাস্তা বন্যায় প্লাবিত। বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এসময় বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মোজাহার আহমেদ বলেন, গত ১৪সেপ্টেম্বর থেকে অদ্যবধি অত্র বিদ্যালয়ের মাঠ,অফিস ও শ্রেণি কক্ষ শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তা, বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা,বাজার,মাছের ঘের,ফসলের ক্ষেত পানিতে প্লাবিত ৷ অন্য একটি স্থানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ৭জন শিক্ষক কর্মরত আছেন ৷ ১৩০জন শিক্ষার্থী আছে যারা হদ, মাগুরখালী ও ব্রাহ্মণডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা এ বিদ্যালয়ে আসে৷ বর্তমানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার রাস্তা পানিতে টই টুম্বুর।
হদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক সাক্ষাতে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের অধিকাংশই বয়স পাঁচ থেকে দশ বছর। তারা অনেকেই সাঁতার জানেনা। পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্লাসরুমেও পানি পোকামাকড় সাপে কাটার আশঙ্কা রয়েছে। নৌকা ডুঙ্গায় করে ওদেরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার নিয়ে আসা হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ৭জন শিক্ষক ও ১৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। গত ১৪সেপ্টেম্বর থেকে অতি বর্ষণের ফলে এলাকা বন্যা প্লাবিত হয়ে যায়। অদ্যবতী আমাদের বিদ্যালয় ক্লাসরুমের ভিতর পানি ঢুকে যাওয়াই শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি মাঠে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের যাতায়াতের রাস্তা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বিদ্যালয়ের অবস্থা পরিস্থিতি সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষা অফিসে অবহিত করা হয়েছে।
মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার মধ্যকুল মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ উঁচু করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠানো হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম জিল্লুর রশীদ বলেন, বন্যায় প্লাবিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]