সোহেল পারভেজ, কেশবপুর : যশোরের কেশবপুরে ৪ আগস্ট নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী যুবলীগ নেতা ও পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কবির হোসেনকে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা। গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকা ওই যুবলীগ নেতাকে গত সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শহরের উপজেলা পাড়ায় দেখা গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে গণধোলাই দেয়। এলাবাসী উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর কেশবপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে। কবির হোসেন কেশবপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর এলাকার সাবদিয়া গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে।
পৌর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল হালিম অটল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও জনতার আন্দোলন বেগবান করতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্তে গত ৪ আগস্ট বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে ডিগ্রী কলেজ মাঠে অবস্থান করতে থাকে। এ সময় আন্দোলন ঠেকাতে তৎকালীন যুবলীগ নেতা, পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কবির হোসেন এবং তার নেতৃত্বে ২০/২৫ জন অতর্কিত হামলা করে। ছাত্র ও জনতা, বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় পৌর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল হালিম অটল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন পলাশ, পৌর ছাত্রদল দলের আহবায়ক খায়রুল ইসলাম, থানা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওয়াহিদুর রহমান অন্তু, যুবদল নেতা আনিসুর রহমান বাবু, সমন্বয়ক মিরাজ হোসেনসহ ১০/১২ জন ছাত্র জনতা আহত হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটলে যুবলীগ নেতা কবির হোসেন আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে পুনরায় জনসম্মুখে আসে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে গোপন বৈঠাক করে পুনরায় নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছিল। এ খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে গণধোলাই দিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে পুলিশ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
কবির হোসেনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কবির হোসেনকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে পা থেঁতলে দিয়েছে। গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের উপজেলাপাড়া থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে পেটানো হয়। পরে হাসপাতাল থেকে তাঁকে থানায় নিয়ে পুরোনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তিনি আওয়ামী লীগের কোনো পদ–পদবিতে না থাকলেও দলটির সমর্থক ছিলেন।
তবে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন কবির হোসেনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উপজেলাপাড়ায় নারীঘটিত ঘটনায় জড়িত থাকায় স্থানীয় লোকজন কবিরকে ধরে এনে মারধর করেন। তিনি তখন ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। কবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁকেসহ স্থানীয় লোকজনের ওপর হামলা করেছিলেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, কবির হোসেনকে পুরোনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কবিরের পায়ে এক্স-রে করা হয়েছে, তেমন কোনো সমস্যা নেই বলে জানা গেছে। তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]