কোটাবিরোধীদের অবরোধে বিভিন্নস্থানে যানজট
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) সকাল থেকেই সারাদেশে ধর্মঘটের পাশাপাশি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও রেললাইন অবরোধ করার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনে নামে তারা।
দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন সড়ক অবরোধের খবর আসতে থাকে। শাহবাগ মোড় অবরোধে পড়ায় সেখান দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র জট সৃষ্টি হয়।
সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানেও বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়।
সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের গতি বাড়াতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
একই দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। এসময় শিক্ষার্থীরা, কোটা নয় মেধার ভিত্তিতে চাকরি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আন্দোলনের কারণে দুপুর ১২টা থেকে এক ঘন্টার জন্য বরিশাল ঢাকা মহাসড়কের নথুল্লাবাদ দিয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রীকোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রী
এদিকে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের পর কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা অযথা সময় নষ্ট করছে। আদালতের রায়ের পর কোটা আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা বাতিলের আন্দোলন হচ্ছে। কোটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে বহাল হয়েছে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করছে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
রোববার সকাল থেকেই সারাদেশে ধর্মঘটের পাশাপাশি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও রেললাইন অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
তারা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকেড’। কোটা বাতিলে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে গত পহেলা জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র জারি করে সরকার। গত ৫ জুন সেই পরিপত্রের আংশিক আংশিক অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
তবে এ আদেশ না মেনে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরে শাহবাগ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের নাম ঘোষণা করছেন আন্দোলনকারীরা। শনিবার শাহবাগে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
এর ব্যাখ্যায় তারা জানান, রোববার সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আটকে দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া। কর্মসূচির আওতায় ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা।
কোটায় ভর করে দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি: কাদেরকোটায় ভর করে দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি: কাদের ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিলো। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিলো।
একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)