কোটা আন্দোলন : আদালত চত্বরে স্বজনদের ভিড়, আটকদের নির্দোষ দাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় জড়িত সন্দেহে আটকদের ঢাকার সিএমএম আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে। এর পর থেকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) আদালত চত্ত্বরে ভিড় করছেন আটকদের স্বজনরা। এসময় আটক ব্যক্তিদের নির্দোষ দাবি করে বিনা অপরাধে গ্রেফতারের অভিযোগ করেন তাদের স্বজনরা।
ঢাকার চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্ত্বর ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার ব্যক্তিদের স্বজনদের ভিড়। কারও মা-বাবা, কারও ভাই কারও বোন কিংবা অন্যান্য আত্বীয়রা অপেক্ষা করছেন। তাদের অনেকে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করছেন।
তাদের মধ্যে বুধবার রাত ৩টায় গ্রেফতার হন রাজধানীর সাইনবোর্ডের বাসিন্দা তুষার। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। শুক্রবার দুপুরে আদালত চত্ত্বরে তুষারের মা মমতাজ বেগম ছেলেকে দেখার জন্য ঢাকার চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট চত্বরের অপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে তুষারের বয়স ২১ কিংবা ২২ হবে। সে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। তাকে রাত ৩টায় ডেমরা থানার পুলিশ এসে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। আমি জানি না আমার ছেলে কি করছে। গত কয়েকদিনের আন্দোলনেও যায়নি।’
শুক্রবার ১২টার দিকে আদালতে ছেলের জন্য এসেছি। সে গাড়ি থেকে আমাকে দেখেই মা মা বলে চিৎকার করছিল।
রাজধানীর কাজলা সামাদ নগরের বাসিন্দা মনির হোসেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় দিকে তুলে নিয়ে যায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। মনির হোসেনের স্ত্রী ছালমা বলেন, ‘গতকাল আমার স্বামী দোকান বন্ধ করে বাসায় এসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ পুলিশ এসে বাসায় ঢুকে যায়। এরপর কিছু না বলেই হ্যান্ডকাফ পরাতে গেলে আমি জিজ্ঞেস করি, কেন আমার স্বামীকে গ্রেফতার করবেন? কী অপরাধ? এরপর হ্যান্ডকাফ দিয়ে আমার হাতে পুলিশ আঘাত করে। এসময় আমার ছোট্ট ছেলে এসে বাধা দিলে তাকে টেনে সরিয়ে দিয়ে আমার স্বামীকে নিয়ে চলে যায়। এসময় তারা আমাদের বাসার নিচের সব সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে।’
এসময় সঙ্গে থাকা আটক মনির হোসেনের মা জানান, ছেলেকে দেখতে এসেছি। এই আন্দোলনে সে কখনো রাস্তায় বের হয়নি। এক সময় বিএনপি সমর্থন করত। এখন সে কোনো দল করে না।
শুধু মনির কিংবা তুষারের স্বজন নয়, শুক্রবার দুপুর থেকে আদালত চত্ত্বরে অনেক স্বজন আটকদের নির্দোষ দাবি করে প্রতিবাদ করেন। এসময় তারা বিনা অপরাধে গ্রেফতারের অভিযোগ করেন।
এসময় গ্রেফতার হওয়া দ্যা মিরর এশিয়া নিউজের সাংবাদিক সাঈদ খানের স্ত্রী সানজিদা ইতি বলেন, ‘আমার স্বামীকে নিউজ করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেট্টোরেলে হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিক নিউজতো করবেই। আমার স্বামী দেশের জন্য কাজ করছে। এছাড়াও আন্দোলনে তার পায়ে ইট পড়ায় কয়েকদিন ভালোভাবে কাজ করতে পারেনি। আমি কখনো আদালতে আসিনি। আমার অসুস্থ ছেলেটা বাবার জন্য কেঁদে কেঁদে অস্থির। আপনারা প্লিজ আমার ছেলের জন্য তার বাবাকে ফিরিয়ে দিন।’
জানা গেছে, কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গত চার দিনে ২ হাজার ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জাগো নিউজ
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)