বেশ কয়েক বছর আগে এই গ্রামে শেষ মানব শিশুটির জন্ম হয়েছিল। বর্তমানে এই গ্রামে মাত্র ২৭ জন মানুষের বসবাস। ২০১২ সালে শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হয়ে যায় গ্রামের একমাত্র স্কুলটিও। দুর্গম পাহাড়ি এই গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িই এখন পরিত্যক্ত।
আর এই পরিত্যক্ত বাড়িগুলো দখল করছে মানুষের মতো দেখতে পুতুলের দল!
জাপানের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম ও কম বসতিপূর্ণ একটি দ্বীপ হল শিকোকু। দ্বীপটি প্রায় ১৮ হাজার ৮০০ বর্গ কিলোমিটার। এই দ্বীপেই রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ‘ছবির মতো সুন্দর’ নাগোরো গ্রাম। একটা সময় এই নাগোরো গ্রামেই বসবাস করতেন প্রায় ৩০০ জন মানুষ, যা এখন কমতে কমতে মাত্র ২৭ জনে এসে ঠেকেছে।
নাগোরো গ্রামে জন্মানো শেষ শিশুটির নাম সুকিমি আয়ানো। সন্তানের জন্মের পর সুকিমির বাবা-মাও গ্রামের অন্যান্য অনেকের মতোই রুজির খোঁজে নাগোরো ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। বাবার মৃত্যুর পর ২০০১ সালে ফের গ্রামে ফিরে আসে সুকিমি। তখন তার বয়স ৪৯ বছর।
প্রায় জনশূন্য গ্রামের পরিত্যক্ত দোকান আর বাড়িগুলো সুকিমির মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে।
এই সুন্দর গ্রামটিকে নিঃসঙ্গতার হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগী হন তিনি। প্রায় মানুষের মতোই দেখতে পুতুল তৈরি করে গ্রামের পরিত্যক্ত দোকান আর বাড়িগুলো সাজিয়ে রাখতে শুরু করেন তিনি। সুকিমিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারাও।
সুকিমির উদ্যোগে এখন আর খালি পড়ে নেই গ্রামের স্কুল। পুতুল শিক্ষক আর ছাত্র-ছাত্রীতে ভরে উঠেছে ক্লাসরুম। গ্রামের মাঠে চাষের ভঙ্গিতে সারাদিন দেখা যায় এক বা একাধিক পুতুলের সারি। গ্রামের মুদি বা চায়ের দোকানও ভরে উঠেছে ‘পুতুল’ ক্রেতায়।
২০১৪ সালে ‘ভ্যালি অফ ডলস’ নামের একটি তথ্যচিত্রের হাত ধরে সুকিমির এই উদ্যোগ বিশ্ববাসীর নজরে আসে। ক্রমশ পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে জায়গা করে নেয় জাপানের নাগোরো গ্রাম।
বর্তমানে এই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা কম হলেও পর্যটকদের আনা গোনা লেগেই থাকে সারা বছর। ফলে বর্তমানে গ্রামের নিঃসঙ্গতা কেটেছে, উপার্জনও বেড়েছে এই পুতুলের দৌলতেই।
সূত্র : জিনিউজ
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]