ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের যৌথ সম্মেলনে আয়োজকদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চ ছাড়লেন ভ্রাতৃপ্রতিম এ সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা। এই চার নেতা হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।
এই চার নেতা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও আয়োজকদের ‘বিশৃঙ্খলার কারণে’ বক্তব্য দিতে পারেননি। এ ছাড়া বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও বক্তব্য দিতে পারেননি। ঢাকা মহানগরের এই সম্মেলন সকাল ১০টায় উদ্বোধনের কথা থাকলেও ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। দীর্ঘ এক ঘণ্টা মহানগরের বিদায়ী কমিটির চার নেতা বক্তব্য দেন। দুপুর ১২টায় মঞ্চে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু শুক্রবার জুমার নামাজ থাকায় সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দিতে শুরু করেন। এ সময় ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা মঞ্চ ত্যাগ করেন। জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠেয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা-সংক্রান্ত কর্মসূচি থাকায় তারা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের শাসিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী বিশৃঙ্খলা করে না। সব নেতা হয়ে গেছে। কতজন নেতা? আজকে নানকের মতো, আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান সময়ের অভাবে বক্তৃতা দিতে পারল না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরে কে বলবে, খেয়াল থাকে না। আজকে জুমার দিন, খেয়াল রাখেন না। এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন। সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না, এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে, এই ছাত্রলীগ চাই না। দুর্নামের ধারা থেকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই আজকের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, বাহাউদ্দিন নাছিম আছেন, কারা নির্যাতিত নেতা। আমাদের কারেন্ট জয়েন্ট সেক্রেটারি বক্তৃতা দিতে পারে নাই। আমন্ত্রিত অনেকেই, আজকে মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কেউ বক্তৃতা দিতে পারে নাই। তারা বক্তা ছিল। আমাদের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বক্তব্য দিতে পারে নাই। তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করে বলতে পারল না? আপনারা দুজনই এক ঘণ্টা, মনে নাই আজকে শুক্রবার। লেখকের না হয় মনে নাই, জয়ের কী মনে নাই। এটা কোন ছাত্রলীগ? বন্ধ করেন। যার নামে স্লোগান দেবেন, তাকে বানাব না। স্লোগান যার নামে হবে, সে বাদ। সে বাদ বলে দিচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা কি ছাত্রলীগ? কোনো শৃঙ্খলা নাই। লেখক-জয়, এটা কি ছাত্রলীগ? নামাতে বললাম পোস্টার, তারা নামায় না। কারা আমি খোঁজ নিচ্ছি। নামাও, পোস্টার নামাও। তারপরও নামায় না। স্লোগান বন্ধ। এত নেতা স্টেজে, তাহলে কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ চাই না। শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ এই ছাত্রলীগ না। মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]