খালেদা জিয়াকে একনজর দেখতে বিমানবন্দর সড়কে জনস্রোত
খালেদা জিয়াকে একনজর দেখতে বিমানবন্দর সড়কে জনস্রোত দেখা গেছে।
লন্ডন যেতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে রয়েল এয়ার এম্বুলেন্সযোগে ওঠেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশে রওয়ানা দেওয়ার কথা থাকলেও খালেদা জিয়া বিমানবন্দরে পৌঁছান রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে। গুলশান থেকে বিমানবন্দরমুখী সড়কে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী।
প্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখতে রাজধানীর গুলশান-২ এবং বনানীর রাস্তায় হাজারো নেতাকর্মীদের অবস্থান ও তাদের মিছিল-স্লোগানে একপর্যায়ে সড়কে তৈরি হয় যানজটের। গুলশানের বাসা থেকে রাত ৮টা ১৪ মিনিটে গাড়িতে করে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিলেও যানজটের কারণে বিমানবন্দরে পৌঁছান রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে।
খালেদা জিয়ার আগমন ঘিরে বিমানবন্দর এলাকাজুড়ে সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সতর্ক উপস্থিতি দেখা গেছে। বিমানবন্দরের সবগুলো প্রবেশমুখে যাত্রী এবং তাদের সঙ্গে আসা স্বজনদের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়।
বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে নেতাকর্মীদের এতটাই ভিড় ছিল যে, গাড়ি থেকে নেমে সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুলশান থেকে বিমানবন্দরের প্রায় নয় কিলোমিটার পথের পুরোটাই গাড়ি চলেছে হাঁটা গতিতে। সঙ্গে সঙ্গে হেঁটে গেছেন অনেক নেতাকর্মী আর নিরাপত্তা সদস্যরা। যে কারণে দুই ঘণ্টায়ও নয় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারেনি খালেদা জিয়ার গাড়িবহর।
দলের নেত্রীকে বিদায় জানাতে রাস্তার পাশে নেতা-কর্মীদের অবস্থানের কারণে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল ব্যহত হয়।
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাতারের চারজন চিকিৎসক ছাড়াও কয়েকজন প্যারামেডিক রয়েছেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাচ্ছেন তার মেডিকেল বোর্ডের ছয় সদস্য হলেন- অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিক, অধ্যাপক নরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন তার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রায় পাঁচ মাস বাদে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। প্রাথমিক পরিকল্পনায় তার লন্ডন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা বলা হলেও এখন যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়াই চূড়ান্ত হয়েছে।
সবশেষ সাড়ে সাত বছর আগে যুক্তরাজ্যেই চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। সেবার চোখ ও পায়ের চিকিৎসা নিয়েছিলেন। লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি,ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় তিনি ভুগছেন।
দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে গত কয়েক বছর থেকে চেষ্টা চালাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরা ও বিএনপি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ও নির্জন কারাগারে তাকে রাখা হয়।
কারাবন্দি জীবনের পর শর্তসাপেক্ষে মুক্তি মিললেও বিদেশে তার চিকিৎসার অনুমতি দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এই অনুমতির জন্য তার দল আন্দোলন-সংগ্রাম করেও সুবিধা করতে পারেনি।
সেই কারণে ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসনের লন্ডনযাত্রার পর আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)