বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনার আয়োজনে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ ও পরিবেশ মেলা’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা’ প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ ও পরিবেশ মেলা উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম উপস্থিত ছিলেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, “আমরা জানি একটাই পৃথিবী, এই পৃথিবী নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করতে হবে। আমরা এই পৃথিবীকে সকলেই বসবাসের জন্য অনুপযুক্ত করে ফেলেছি। বাংলাদেশের সেই সুজলা-সুফলা, উন্নত শিকড়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয়ও হচ্ছে। আপনারা জানেন যে, ঢাকা শহরে বায়ু দূষণ তীব্র আকার ধারণ করছে। যা পৃথিবীর দূষিত কয়েকটি নগরীর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিতি হয়েছে। এটা আমাদের জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। ইতিমধ্যেই ঢাকা শহরে শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা তুরাগ নদীর পানি পরিবেশ দূষিত করে ফেলেছে। আমরা আজ মানুষের বর্জ্য ও বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলে জীববৈচিত্র ধংস এবং পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত করে ফেলেছি। আমাদের এই দুর্ভাগ্য যে প্রতিনিয়ত বিনা কারণে ভূগর্ভস্থ পানি অপচয় করছি। আমাদের ১৭ কোটি মানুষের জীবনযাপনের জন্য খাদ্য উৎপাদন প্রয়োজন। যেখানে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনের জন্য এখনো উন্নত লবণ-সহিষ্ণু এবং খরা-সহিষ্ণুতা অঞ্চলে প্রায় ৬০০ লিটার পানি প্রয়োজন হয়। প্রতিনিয়ত ভূগর্ভস্থ নিচে নেমে যাচ্ছে। প্রকৃতিক দুর্যোগ (আইলা, সিডর, রেমেল) ইত্যাদির কারণে ক্রমাগত এই দক্ষিণ অঞ্চল গ্রাস হয়ে যাচ্ছে। যা আমরা এখনো মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়নি। এক সময় সাধু পানি পাওয়া যেত না। নতুন প্রজন্মকে নদী রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যে ধরনের রেফ্রিজারেটরসহ ইলেকট্রনিক জিনিস ব্যবহার করে থাকি যা পরোক্ষভাবে পরিবেশ দূষণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনের শব্দ দূষণের কারণে আমাদের শ্রবণশক্তি ক্রমশ কমে যাচ্ছে। আমরা একটি পরিসংখ্যান নিয়ে দেখেছি যে, পুলিশ বাহিনীকেত যে সকল পুলিশ সদস্যরা শহর কেন্দ্রিক যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক ডিউটি করে তাদের কানের শ্রবণ শক্তি কমে যাচ্ছে। যত্রতত্র ইট ভাটা ও কারখানার বজ্য পদার্থ ফেলার ক্ষেত্রে সকলকে সচেতন করে বায়ু দূষণ কমিয়ে আনতে হবে এবং যানবাহনের অতিরিক্ত হর্ন বাজানোর ফলে শব্দ দূষণ সৃষ্টি হয় যা কমিয়ে আনতে হবে। উন্নয়নের নামে যেন পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা করেই উন্নয়ন করা হয়, সেটি সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তর করা রূপকল্প গ্রহণ করেছে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে কাজ করতে হবে।”
এ সময় ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা’ উদযাপন অনুষ্ঠানে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনার পরিচালক (উপ-সচিব) জনাব মোঃ ইকবাল হোসেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিভাগীয় কমিশনার, খুলনা জনাব মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম মিরাজুল ইসলাম, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সালমা বেগম; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব সুশান্ত সরকার, পিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মোঃ নাজমুল হুসেইন খাঁন এবং খুলনা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জনাব মুকুল কুমার মৈত্র-সহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]