বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার মূল আঘাত মিয়ানমারে হলেও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যাপক তাণ্ডব দেখিয়েছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিন অনেকটা লণ্ডভণ্ড হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ে। পুরো ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো সামনে আসেনি। তবে কক্সবাজারের টেকনাফের পথে পথে মোখার তাণ্ডবের চিহ্ন চোখে পড়েছে।
রোববার (১৪ মে) দুপুরের দিকে সেন্টমার্টিনে আঘাত হানার পর তা বিস্তার লাভ করে টেকনাফ এলাকায়ও। বিকেলের দিকে টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং এলাকা ঘুরে মোখার তাণ্ডবের চিহ্ন দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোথাও গাছ ভেঙে পড়ে আছে সড়কে। কোথাও টিনের চালা উড়ে গিয়ে আটকে আছে গাছের সঙ্গে। বিশেষ করে কাঠের তৈরি ঘরগুলোর বেশিরভাগই কোনো না কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব না থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে রূপ। টেকনাফ ও এর আশপাশের এলাকায় তীব্র গতির বাতাস বইতে শুরু করে। সেই সাথে শুরু হয় অঝোরে বৃষ্টিপাত। উত্তাল রয়েছে সাগরও। বেলা ১টার দিকে টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বাতাসের তীব্রতায় আশপাশের গাছগাছালি অনেক অংশ ভেঙে পড়তে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশপাশের দোকানগুলো সবই বন্ধ রয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।
এদিকে, ভালো নেই পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান সেন্টমার্টিনও। কক্সবাজারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনের একাংশ সমুদ্রের পানিতে ভাসছে। সেখানে ঘরবাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উপড়ে গেছে। সেন্টমার্টিনে গাছ পড়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকেই।
সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন স্থানে এমন পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান বলেন, এই মুহূর্তে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতি প্রচুর। অনেক ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। শুনেছি গাছ পরে এক নারীর মৃত্যুও হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। কিন্তু বৈরী পরিবেশের কারণে বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে রোববার (১৪ মে) বিকেলে আবহাওয়া অধিদফতরের ২১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপকূল অতিক্রমরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর এবং সামান্য দুর্বল হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]