ইউক্রেন থেকে দেশে পৌঁছেছে ৫২ হাজার ৫০০ টন গম। বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে কুতুবদিয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে সরকারি এসব গম নিয়ে পৌঁছায় ম্যাগনাম ফরচুন নামের একটি জাহাজ।
বৃহস্পতিবার গমগুলোর নমুনা সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। এর পরেই গমগুলো খালাসের বিষয়ে নেয়া হবে সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে বন্দরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক (স্টোরেজ অ্যান্ড মুভমেন্ট) আবদুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক (স্টোরেজ অ্যান্ড মুভমেন্ট) আবদুল কাদের জানান, আজ ইউক্রেন থেকে আসা জাহাজ থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে ল্যাব টেস্টে চুক্তি অনুযায়ী ধরন ও মান ঠিকঠাক থাকলে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শুরু হবে খালাস প্রক্রিয়া।
সম্প্রতি ভারত থেকে গম আমদানির চেষ্টা করে সরকার। তবে দেশটি রাজি না হওয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে জিটুজি ভিত্তিতে গম আনার চুক্তি হয়। যার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুই চালানে রাশিয়া থেকে আসে এক লাখ টনের বেশি গম।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশে বছরে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন কম হওয়ায় চাহিদার ৯০ শতাংশ আমদানি করে মেটাতে হয়। গত কয়েক বছরে ৬০-৬২ লাখ টন করে গম আমদানি হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই আমদানি একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে। যেকারণে গম ও গম থেকে তৈরি পণ্যের সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।
খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে সরকারিভাবে গমের মজুত আছে ৫৪ হাজার ৩৭৫ টনের মতো। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোট গমের আমদানি ছিল ৫৩.৪৩ লাখ টন। এরমধ্যে ১৭% ইউক্রেন থেকে এবং ২১% রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি নেমে আসে ৪০.১২ লাখ টনে।
দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আগে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার টন গম বেচাকেনা হয়। তবে পরে তা নেমে আসে ১০-১২ হাজার টনে। এখন তা আরও অর্ধেকে নেমেছে। একইসঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে দামও। গত সপ্তাহে যে গমের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪৪ টাকা, মঙ্গলবারে তা দাঁড়ায় ৪৬ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের আলম ট্রেডিং করপোরেশনের পরিচালক জাবেদুল আলম বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গম রপ্তানি করেছে ভারত। এরপর দেশটি আমাদের তা দেয়নি। ফলে মজুত কমে গেছে।
মেসার্স মুনাল ট্রেডিংয়ের পরিচালক সুমন কুমার সাহা বলেন, বাজারে ঊর্ধ্বগতি একটু আছে। কারণ, গমের সংকট রয়েছে। তবে যে জাহাজগুলো আসছে, সেগুলো খালাস হলে সমস্যা থাকবে না।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, এখন বন্দরে জাহাজ থেকে প্রতিদিন গম খালাস হচ্ছে। বাজারে সরবরাহ বাড়ছে। সামনে বেসরকারি খাতের আমদানি করা আরও গম আসবে। তাই দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]